শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটী ইউনিয়নের যুবদল নেতা শামীম শেখের হত্যাকাণ্ডে তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি এবং তার মামাতো ভাই ওবায়দুল্লাহ হাওলাদার গ্রেপ্তার হয়েছেন। পারিবারিক বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয় বলে জানা গেছে।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি তার স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সে তার মামাতো ভাই ওবায়দুল্লাহকে বাড়িতে ডেকে আনে এবং ২১ আগস্ট তাকে জানায় যে, শামীমকে খুন করার জন্য তার সাহায্য প্রয়োজন। ওবায়দুল্লাহ এতে সম্মতি দেয়।
২২ আগস্ট রাতে, শামীম শেখ ও তার স্ত্রী ৩য় তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটে গেলে কিছুক্ষণ পর ওবায়দুল্লাহও সেখানে যায়। ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি ওবায়দুল্লাহকে শামীমকে খুন করার জন্য নির্দেশ দেয় এবং পরিকল্পনামতো শামীমের ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই শামীম মারা যায়।
হত্যাকাণ্ডের পর, ওবায়দুল্লাহ এবং ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি ছুরি পাশের জলাশয়ে ফেলে দিয়ে স্বাভাবিক আচরণ করে। পুলিশ তাদের দেওয়া তথ্যমতে ছুরিটি উদ্ধার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছে। খুলনা জেলা পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
নিহত শামীম শেখ তালা থানার ৭নং ইসলামকাঠি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ডুমুরিয়া থানার বেতাগ্রামে বসবাস করতেন।
ঘটনার পর নিহতের মা রশিদা খাতুন অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর খুলনা জেলা পুলিশ সুপার টি. এম. মোশাররফ হোসেনের তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবির সিদ্দিকী শুভ্রের নেতৃত্বে তদন্তকারী দল দ্রুততার সহিত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার এবং হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করে।
এই ঘটনা পারিবারিক সহিংসতার একটি চরম উদাহরণ এবং সমাজের কাছে একটি সতর্কবার্তা। পারিবারিক কলহের কারণে কতটা ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে তা এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এই ধরনের সহিংস ঘটনার প্রতিরোধে এবং অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পারিবারিক সহিংসতা মোকাবেলায় সামাজিক সচেতনতা এবং মনস্তাত্ত্বিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সমাজের সকল স্তরে এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সহিংসতা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।