শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:
বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশ্যে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল মুকিতের প্রকাশ্যে ঘুষ নেয়ার ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর সেখানে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন ।
মঙ্গলবার (২৭ মে'২৫) বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুদক খুলনা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান শুভ্রর নেতৃত্বে
অভিযান চালায় ৫ সদস্যের দুদকের একটি টিম। এ সময় ভূমি কর, নামজারিসহ বিভিন্ন সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলেন দুদক কর্মকর্তা। এক পর্যায় ভূমি কর দিতে আশা নগরঘাটা ইউনিয়নের আব্দুস সাত্তার নামের এক সেবা প্রার্থীর নিকট থেকে ঘুষের ১০ হাজার টাকাসহ অফিস সহায়ক শমসের আলীকে আটক করে। এর আগে অফিসে দু ঘন্টা ধরে তল্লাশী করে লুকিয়ে রাখা ঘুষের টাকা অফিস টেবিলের পাশে রক্ষিত একটি বাস্কেটের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়।
দেশব্যাপী ভূমি মেলা চলাকালীন সময়ে দুদকের অভিযানে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে আটকের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে ভুক্তভোগী সেবা প্রার্থী আব্দুস সাত্তার জানান, সরকারি ফিস অনুযায়ী তার জমির ভূমি করের জন্য ৪ হাজার ৬৫৭ টাকা নির্ধারিত হয়। কিন্তু ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা দুর্নীতিবাজ আব্দুল মুকিত ও তার সহযোগী অফিস সহায়ক শমসের আলী ১২ হাজার টাকা দাবী করেন। এক পর্যায়ে তিনি বাধ্য হয়ে তাদের দাবিকৃত ঘুষের ১০ দশ হাজার টাকা প্রদান করেন।
এদিকে ঘটনা জানার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শেখ মইনুল ইসলাম মঈন অফিস সহায়ক শমসের আলীকে ব্যবস্থা না নিয়ে কারণ দর্শনোর নোটিশ দিয়েছেন। ঘটনা প্রমাণিত হলে বরখাস্ত করা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এর আগে ঘুষের টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না ভূমি অফিসে এই শিরোনামে নগরঘাটা ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল মুকিতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তাকে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বদলি করা হয়েছে।
অথচ বদলীর পরও অভিযানের সময় ভুমি কর্মকর্তা আব্দুল মুকিত নগরঘাটা ভূমি অফিসে অবস্থান করছিলেন।
এ ব্যাপারে দুদক খুলনার সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মাহমুদুল হাসান শুভ্র জানান, নগরঘাটা ভূমি অফিসে ঘুষ লেনদেনের ভিডিও নজরে আসার পর মঙ্গলবার বেলা ১২ দিকে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সাদা পোশাকে ছদ্দবেশী হিসেবে সেবা প্রার্থী হিসেবে অবস্থান করা হয়। একপর্যায়ে একজন সেবা প্রার্থী জমির খাজনা দিতে আসেন। সরকারি ফি অনুযায়ী ৪ হাজার ৬৫৭ টাকা নির্ধারিত হয়। কিন্তু ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল মুকিত ও তার সহযোগী অফিস সহায়ক শমসের আলী তার নিকট থেকে দশ হাজার টাকা ঘুষ নেন। দুদক দেখে ফেললে অফিসের ময়লা ফেলার বাস্কেটে টাকা লুকিয়ে রাখা হয়। দুদক সদস্যরা সেখান থেকে ঘুষের টাকা উদ্ধার করেন।
তিনি আরো বলেন বিষয়টি লিখিতভাবে দুদক কমিশন কার্যালয়ে পাঠানো হবে। পরবর্তী নির্দেশ মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।