শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাতক্ষীরা জেলা শাখার উদ্যোগে থানা দায়িত্বশীলদের নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট '২৫) সাতক্ষীরার মুন্সিপাড়াস্থ কাজী শামসুর রহমান মিলনায়তনে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা শাখার আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সাবেক মাদ্রাসা সম্পাদক হাফেজ ইমদাদুল হক এবং সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এইচআরডি সম্পাদক মোঃ আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও জেলা দপ্তর সম্পাদক নাহিদ হাসান, জেলা অর্থ সম্পাদক মতিউর রহমান, জেলা এইচ আর ডি আনিছুর রহমান, জেলা মিডিয়া সম্পাদনা জাহিদ হাসান রানা, জেলা দেওয়াহ সম্পাদক হাফেজ সোহরাব হোসেন, জেলা স্পোর্টস সম্পাদক আব্দুস সামাদসহ জেলা শিবিরের সেক্রেটারিয়েটবৃন্দ কর্মশালায় অংশ নেন।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা শিবিরের সভাপতি মোঃ জুবায়ের হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন জেলা শিবির সেক্রেটারি নাজমুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা জামায়াত আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল বলেন, 'বিগত সাড়ে পনেরো বছর ধরে ছাত্রশিবিরকে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হয়নি, মাদরাসাগুলোতেও স্বনামে দাওয়াত দেওয়ার পথ রুদ্ধ করা হয়েছিল। ছাত্রশিবিরের নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে ছাত্রসমাজের কাছে নেগেটিভ চরিত্রের সংগঠন হিসেবে উপস্থাপন করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। শুধু তাই নয়, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাসা থেকে ধরে নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হতো। তবে এসব বাধা অতিক্রম করে ছাত্রশিবির এখন ছাত্রসমাজের কাছে সভ্য, ভদ্র এবং মেধাবী ছাত্রদের ঠিকানা হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে।'
সমাপনী বক্তব্যে জেলা সভাপতি জুবায়ের হোসেন বলেন, 'আমাদের দায়িত্বশীলদের সংগঠনের আদর্শ বিস্তার করার লক্ষ্যে সর্ব সাধারণের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের বৃহত্তর স্বার্থে সহায়তা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। এজন্য সংগঠন পরিচালনায় আমাদের জবাবদিহিতা, আমানাতদারীতা, স্বচ্ছ থাকতে হবে। সাথে সাথে নিজেদের নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। কেননা আমাদের কাজেই হচ্ছে একজন ছাত্রকে সৎ, দক্ষ, দেশপ্রেমিক হিসাবে গড়ে তোলা। এজন্য সবার আগে আমাদের নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। এজন্য চারিত্রিক মাধুর্য দিয়ে আমাদের একটা পবিত্র পরিবেশ সৃষ্টি তৎপরতা চালাতে হবে। তাহলে কেবলই ছাত্রসমাজ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে গ্রহণ করবে।'
কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল দায়িত্বশীলদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী বৃদ্ধি করা এবং সংগঠনের আদর্শের প্রচার ও প্রসার করা। এছাড়াও কর্মশালায় নেতৃত্বের গুণাবলী, যোগাযোগের দক্ষতা এবং সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে বিভিন্ন দিক আলোচনা করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা তাদের মতামত এবং অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন, যা ভবিষ্যতে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে।
বিশ্লেষণাত্মক পর্যায়ে দেখা যায় যে, এ ধরনের কর্মশালা শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ছাত্রশিবিরের কর্মশালাগুলো সাধারণত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তোলে এবং তাদের দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
এই কর্মশালায় আলোচনা করা হয়েছিল যে কীভাবে ইসলামী আদর্শের মাধ্যমে একটি নৈতিক এবং সুশৃঙ্খল সমাজ গঠন করা সম্ভব। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা জাগ্রত করার লক্ষ্যে এ ধরনের উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কর্মশালার আলোচনায় ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী ও সামাজিক দায়িত্ববোধ আরও সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা করা হয়।