ঋণের ফাঁদে নিঃস্ব পরিবার, এনজিওর কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ
প্রগতির নামে সর্বনাশ!
গ্রামীণ জীবনে আর্থিক উন্নয়নের নামে দারিদ্র্য বিমোচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এনজিওগুলো যে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম চালায়, তা অনেক ক্ষেত্রে অশান্তি আর ধ্বংস ডেকে এনেছে। বিশেষত, জামানতবিহীন ঋণ ও নানা শর্তে জড়ানো চুক্তি অনেক মধ্যবিত্ত ও হতদরিদ্র পরিবারকে ঋণের জালে ফাঁসিয়েছে।
একটি বাস্তব চিত্র
মালীগ্রামের জামিলা (ছদ্মনাম) পল্লী প্রগতি সহায়ক সমিতি থেকে ঋণ নেওয়ার পর জীবনের শান্তি হারান। প্রথমেই ঋণের একটি অংশ জীবন বীমার নামে কেটে রাখা হয়, যা আর ফেরত দেওয়া হয়নি। সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তির নামে থাকে বাধ্যতামূলক ও ঐচ্ছিক সঞ্চয়ের চাপ। করোনাকালীন সময়ে সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এই প্রতিষ্ঠান তাদের শাখা থেকে কিস্তি আদায় চালিয়ে যায়।
কর্মীরা নিয়মিত বাড়িতে গিয়ে হুমকি-ধমকি দিতেন। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে অনেক নারী আত্মহত্যার মতো ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভাঙ্গা উপজেলায় এমন একাধিক ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
অভিযোগের তীর মালীগ্রাম শাখার দিকে
স্থানীয়দের অভিযোগ, মালীগ্রামের এই এনজিও সংস্থা চরম বেপরোয়া আচরণ করেছে। অফিসে গিয়ে গ্রাহকরা পাননি ন্যূনতম সম্মান। ব্যবস্থাপক থেকে মাঠকর্মী পর্যন্ত সবার মধ্যে ছিল রূঢ় ব্যবহার। এমনকি একবার ঋণের দায়ে এক নারীকে আটকে রাখা হয়েছিল, পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে মামলা দায়ের করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে
এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু সামাজিক অস্থিরতাই নয়, বরং পরিবারগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে সর্বনাশের পথে ঠেলে দিচ্ছে। প্রয়োজন একটি নীতিমালা ও কঠোর তদারকি, যাতে উন্নয়নের নামে ঋণের ফাঁদ আর কেউ না পাতে।