চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় কর্ণফুলী নদীতে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের দায়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে তিনটি ড্রেজারকে আটক করে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই অভিযান পরিচালিত হয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবব্রত দাশের নেতৃত্বে। অভিযানে সহযোগিতা করেন রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহলদল। আদালত বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী এই জরিমানা প্রদান করে।
রাঙ্গুনিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র জনতার ব্যানারে ইছামতি, কর্ণফুলী ও শিলক খালে অবৈধ বালি উত্তোলনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও স্বারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। স্থানীয় জনগণ এই অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে। তবে মাঠ পর্যায়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম শহর থেকে বালির ট্রাকের দীর্ঘ সারি রাতভর বালি পরিবহন করছে। ইজারাদারদের দাবি, তারা নিলামের মাধ্যমে বৈধভাবে বালি উত্তোলন ও বিক্রি করছেন। বালি উত্তোলন বন্ধ হলে তাদের জমাকৃত ইজারার টাকা ফেরত দিতে হবে বলেও তারা জানিয়েছেন।
নদী উপকূলের বসতবাড়ি, স্থাপনা ও গার্ড ওয়ালের ক্ষতি এবং ভাঙ্গন রোধে ব্লকের ক্ষতির কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বালির অতিরিক্ত উত্তোলনের কারণে নদীর পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে এবং রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ইজারাদাররা অতিরিক্ত বালি উত্তোলন করছেন। বালি পরিবহনে ব্যবহৃত ভারী ট্রাকগুলোর কারণে সড়কগুলো খানাখন্দে পরিণত হচ্ছে।
অন্যদিকে, নদীপথে কালুরঘাট ও নতুনব্রীজ কেন্দ্রিক ড্রেজার ও ভলগেটের মাধ্যমে রাতে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। তবে, সাম্প্রতিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের ফলে তাদের তৎপরতা কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন বালি ব্যবসায়ীরা। গত ২০ অক্টোবর রাতে কদমতলী চারাবটতল বালুমহালে দেখা যায়, প্রায় ৫০টি বালিবাহী ট্রাক বালি পরিবহনের জন্য প্রবেশ করছে।
পরিবেশবিদদের মতে, এই ধরনের অবৈধ বালি উত্তোলন পরিবেশের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। নদীর তলদেশের পরিবর্তন, জলের প্রবাহে বিঘ্ন এবং নদী তীরবর্তী জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া, স্থানীয় জনগণের জীবিকা ও নিরাপত্তার ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এই ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখার মাধ্যমে অবৈধ বালি উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। প্রশাসনের কঠোর তৎপরতা এবং স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা এই সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			