close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

প্রবাসীদের ‘ভরসার মানুষ’ সাইফুল রাজীবের মানবিক উদ্যোগ

Touhid Sarkar avatar   
Touhid Sarkar
হাজার মাইল দূরের প্রবাস জীবনে থাকে ঘাম, কষ্ট আর পরিবারের জন্য ত্যাগ। মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীরা দিনরাত সংগ্রাম করে জীবিকার জন্য, কিন্তু কখনো পাশে কেউ দাঁড়ালে তিনি হয়ে ওঠেন ভরসার নাম।..

ঠিক তেমনই একজন প্রবাসীদের চোখে ‘ভরসার মানুষ’ সাইফুল রাজীব। তিনি শুধু একজন সাংবাদিক নন, বরং প্রবাসীদের আস্থা ও গর্বের প্রতীক হিসেবে পরিচিত, যিনি তার মানবিক কাজের মাধ্যমে হাজারো জীবনের আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছেন।

প্রবাসীদের জীবন-মরণে পাশে দাঁড়ানো

সাইফুল রাজীবের কাজের ধরনই তাকে প্রবাসীদের হৃদয়ের মানুষ বানিয়েছে। তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অসহায় প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ানো। তিনি ১৭ জন নির্যাতিত নারী শ্রমিককে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে এনেছেন, যাদের অনেকেই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। এই নারীদের আইনি সহায়তা দেওয়া থেকে শুরু করে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়াটি তিনি নিজে তত্ত্বাবধান করেছেন।

এছাড়া, অসুস্থ প্রবাসীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে তিনি নিরলস কাজ করেছেন। ২৫ জন অসুস্থ প্রবাসীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তিনি সহযোগিতা করেছেন, যাদের মধ্যে অনেকে ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে পরিবারের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা ছিল এক বিশাল মানবিক উদ্যোগ।

আরও একটি কঠিন কাজ হলো ২৯ জন প্রবাসীর মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা। যখন কোনো প্রবাসীর মরদেহ বিদেশের মাটিতে পড়ে থাকে, তখন তাদের পরিবার এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়। সাইফুল রাজীব এই শোকাহত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন, এবং আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতা পেরিয়ে মৃতদেহগুলো দেশে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেছেন। এই কাজগুলো শুধু পেশাগত দায়িত্ব নয়, বরং গভীর মানবিকতার প্রতিফলন।

মানবপাচার ও শ্রমিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠ

সাইফুল রাজীব শুধু দুর্দশাগ্রস্ত প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ানোতেই সীমাবদ্ধ নন। তিনি নিয়মিতভাবে ফ্রি ভিসা, মানবপাচার এবং শ্রমিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন। তার ফেসবুক পেজ “প্রবাসের সাতকাহন – সাইফুল রাজীব” এবং ইউটিউব চ্যানেল এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। এই প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে তিনি সাধারণ প্রবাসীদের সচেতন করেন এবং মানব পাচারকারীদের মুখোশ উন্মোচন করেন। তার এই নিরন্তর প্রচেষ্টা অনেক প্রবাসীকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করেছে।

কঠিন পরিস্থিতিতেও অটল

সাইফুল রাজীবের কাজ যে সবসময় মসৃণ ছিল তা নয়। ২০২১ সালে কিছু অসাধু কনস্যুলেট কর্মকর্তার মিথ্যা অভিযোগে তিনি গ্রেফতার হন এবং ৮৮ দিন জেলে কাটান। কিন্তু এই কঠিন অভিজ্ঞতা তাকে দমাতে পারেনি। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি আরও দৃঢ় সংকল্প নিয়ে প্রবাসীদের জন্য কাজ শুরু করেন। তার এই অটল মনোবল এবং ত্যাগী মনোভাবই তাকে প্রবাসীদের কাছে একজন নির্ভরযোগ্য অভিভাবকে পরিণত করেছে।

সংক্ষেপে বলা যায়, সাইফুল রাজীব একজন সাংবাদিকের চেয়েও বেশি কিছু। তিনি একজন প্রকৃত মানবতাবাদী, যিনি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও প্রবাসীদের জন্য কাজ করে চলেছেন। তার কাজগুলো কেবল তথ্য সরবরাহ নয়, বরং এটি জীবন বাঁচানোর এবং সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার এক ধারাবাহিক সংগ্রাম।

No comments found