জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে নূর ইসলামের পরিবার অবশেষে বিদ্যুতের আলো পেল। পাঁচ বছর আগে এক দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ডে আঘাত পাওয়ার পর নূর ইসলাম তার কর্মক্ষমতা হারান। দীর্ঘ সময় ধরে তার ছোট্ট ঘরটি অন্ধকারে ডুবে থাকত, একমাত্র ভরসা ছিল ধোঁয়াজনিত কেরোসিনের বাতি। পরিবারের এই দুরবস্থা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর স্থানীয় সমাজের সহৃদয় ব্যক্তিরা এগিয়ে আসেন।
নূর ইসলামের স্ত্রী বলেন, "এতদিন অন্ধকারেই ছিলাম। এখন ঘরে আলো জ্বলে, বাচ্চারা পড়তে পারবে।" নূর ইসলাম নিজেও জানান, "বিদ্যুৎ না থাকায় খুব কষ্ট হত। এখন খুব খুশি, ছেলে-মেয়েরা লেখা পড়া করতে পারবে।"
এই পরিবর্তনের পথপ্রদর্শক হয় এনটিভি অনলাইনের মানবিক প্রতিবেদন, যেখানে নূর ইসলামের পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে কষ্ট পেতে হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রতিবেদনটি দেখার পর পাঁচবিবি মডেল প্রেসক্লাব, ডু সামথিং ফাউন্ডেশন এবং সমাজের কিছু হৃদয়বান ব্যক্তি নূর ইসলামের পরিবারের পাশে দাঁড়ান।
ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের আহসান হাবিব ও এনটিভি অনলাইন করেসপন্ডেন্ট মনোয়ার হোসেনের প্রচেষ্টায় পল্লী বিদ্যুৎ ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ তরিকুল ইসলাম দ্রুত সংযোগের উদ্যোগ নেন। কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অবশেষে নূর ইসলামের ঘরে বিদ্যুৎ, সেলিং ফ্যান এবং একটি টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়।
এই ঘটনা প্রমাণ করে, সামান্য সচেতনতা বা সহানুভূতির হাতও একটি পরিবারের জীবনে বিশাল পরিবর্তন আনতে পারে। নূর ইসলামের মতো আরও অনেক মানুষ রয়েছেন, যাদের জন্য প্রয়োজন একটুখানি সাহায্যের হাত।
স্থানীয় সমাজের এমন উদ্যোগ শুধু নূর ইসলামের পরিবারের জন্য নয়, বরং এটি সমাজের অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করেছে। এই ধরনের মানবিক সহায়তা সমাজে একতা এবং পারস্পরিক সাহায্যের একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক সংগঠনগুলোও এই ঘটনার মাধ্যমে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে, যা সমাজের দায়িত্বশীলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও উদ্যোগ নেওয়া হলে সমাজের অন্যান্য নিঃস্ব পরিবারগুলোর জীবনেও পরিবর্তন আসতে পারে। তাই সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এই ধরনের উদ্যোগে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে।