close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

অতিবৃষ্টির প্রভাব: সাতক্ষীরায় তরমুজ চাষে লোকসানের আশংকা..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় অতিবৃষ্টির কারণে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে লোকসানের মুখে কৃষকরা..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় এবছর অতিবৃষ্টির কারণে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে পারেন কৃষকরা। গত কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলে তরমুজ চাষে কৃষকরা উল্লেখযোগ্য সফলতা পেয়েছেন, তবে এ বছর প্রকৃতির বৈরিতার কারণে তারা শঙ্কিত।

তেঁতুলিয়া ও ভায়ড়া গ্রামের কৃষকরা জানান, তাদের খেতের মাচায় ঝুলছে শত শত তরমুজ। মধুমালা, ব্ল্যাক বেরি, কানিয়া জাতের তরমুজের কিছু ইতোমধ্যে বাজারজাতের উপযোগী হলেও কিছু এখনও পরিপক্ব হয়নি। চাষিরা বলছেন, খেতে এগুলো সুস্বাদু হলেও অতিবৃষ্টির কারণে গাছের ক্ষতি হওয়ায় ফলন কম হয়েছে।

তেঁতুলিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্না বিশ্বাস জানান, তিনি চার জাতের তরমুজ চাষ করেছেন ৮ শতক জমিতে, যার জন্য তার ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সাধারণত প্রতি মৌসুমে তিনি লাভবান হলেও এবছর অতিবৃষ্টির কারণে তেমন লাভ হবে না বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তার খেতে প্রতিটি তরমুজের ওজন ২ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত হয়। তিনি আশা করছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারজাত শুরু হবে এবং প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে মাঠ থেকেই পাইকাররা কিনে নেবেন।

রফিকুল ইসলাম ও রাসেল যথাক্রমে ১২ ও ১৩ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। রফিকুল ইসলাম বলেন, “ধান ও পাট উঠতে চার মাসের বেশি সময় লাগে। কিন্তু তরমুজ মাত্র ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হয়। এজন্য তরমুজ চাষ করে আমরা উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছি।” তাদের মতো আরও অনেকেই গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে ঝুঁকেছেন।

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে প্রচুর লাভের সম্ভাবনা থাকায় এটি চাষের জন্য কৃষকদের অনুপ্রেরণা দেওয়া হচ্ছে। এবছর উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কিছু ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

অতিবৃষ্টির প্রভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষি ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জগুলো দেখা দিচ্ছে, তা মোকাবিলায় কৃষকদের নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন পরিস্থিতি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, ফলে কৃষকদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অঞ্চলের কৃষকরা যদি সঠিক পরামর্শ ও প্রযুক্তি পায়, তবে তারা ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন। সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের সহযোগিতা ও প্রণোদনা দেওয়া হলে তারা আরও উত্সাহিত হবেন এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সক্ষম হবেন।

No comments found