close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

অক্ষম ব্যক্তিদের অফিস চিনাতে ঝড়বৃষ্টিতে দুর্ভোগ: বিজয়নগর উপজেলায় সমালোচনা..

MD JAHANGIR ALAM avatar   
MD JAHANGIR ALAM
বিজয়নগর উপজেলায় ২৬৭৯ জন অক্ষম ব্যক্তিকে অফিস চিনাতে ডাকার ফলে ঝড়বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।..

বিজয়নগর উপজেলা সমাজসেবা অফিসের নির্দেশে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নতুন ভাতা প্রাপ্ত ২৬৭৯ জন বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ঝড়বৃষ্টির মধ্যে উপজেলা চত্বরে উপস্থিত হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহান। ৯ ও ১০ জুলাই দুই দিনব্যাপী এই কর্মসূচির জন্য তাদের ডাকানো হয়, শুধুমাত্র একটি সাক্ষরের জন্য। কর্মকর্তারা জানান, ভবিষ্যতে সবাই যেন অফিস চিনে আসতে পারে, সে জন্যই এই উদ্যোগ। তবে স্থানীয়রা বলছেন, এমন পরিস্থিতি অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য সম্মানহানিকর এবং অমানবিক।

বয়স্ক ভাতা ৬৪১ জন, বিধবা ভাতা ১০৭৩ জন এবং প্রতিবন্ধী ভাতা ৯৬৫ জন—মোট ২৬৭৯ জন চলাফেরায় অক্ষম ব্যক্তি ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে উপস্থিত হন। তাদের বেশিরভাগই বয়সের ভারে ন্যুব্জ, কেউ কেউ হুইলচেয়ার বা লাঠির সাহায্যে চলাফেরা করেন। এই পরিস্থিতিতে, অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এত কষ্ট করে একটামাত্র সাক্ষরের জন্য আসতে হলো। আগে কখনো এমন হয় নাই। বরং মেম্বার বা ইউপি সচিবের মাধ্যমেই কাজ হয়ে যেত।”

অনেকে পরিবারের সদস্যকে প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠালেও তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সমাজসেবা অফিসের বিরুদ্ধে। স্থানীয় হরষপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোঃ মাহফুজ মিয়া বলেন, “আগে আমরা ইউপি সদস্য বা সচিবের মাধ্যমে যাচাই করে সাক্ষর দিয়ে দিতাম। এতে ভাতাভোগীদের উপস্থিত হতে হতো না। এবার নতুন নিয়মে সবাইকে ডাকা হয়েছে, এতে দুর্ভোগ বেড়েছে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয়নগর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) রাকেশ পাল বলেন, “ভবিষ্যতে সবাই যেন অফিস চিনে আসে, সে জন্যই তাদের অফিসে ডাকা হয়েছে।” তবে স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও সাংবাদিক মহল বলছে, কার্যালয় চিনানো হতে পারে ভবিষ্যতের প্রয়োজন, কিন্তু এতে যদি প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের সম্মানহানি হয়, সেটি রাষ্ট্রীয় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশাসনিক নিয়মকানুন প্রয়োগ করতে গিয়ে মানুষকে এমন দুর্ভোগে ফেলা উচিত নয়। প্রশাসনের উচিত মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করা এবং বিশেষভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য সহজ ও সম্মানজনক পদ্ধতি তৈরি করা। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। স্থানীয় নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারণী সংলাপের আহ্বান জানাচ্ছে।

Hiçbir yorum bulunamadı