নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলায় ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় পূর্বধলা সদর ইউনিয়নের বারধার গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর আরমান ছিলেন ওই এলাকার কমল মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার সময়ে আরমানের ছোট ভাই রোমান (৭) পরিত্যক্ত একটি ঘরের ভেতরে ঢুকতে গিয়ে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান। এর পর তার বাবা কমল মিয়া দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পান, আরমান বাঁশের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলছে। দ্রুত ওড়না কেটে নামালেও ততক্ষণে আরমানের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পূর্বধলা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিন্টু দে এবং সঙ্গীয় ফোর্স। তারা সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, আরমান দুই মাস আগে হাফেজি সম্পন্ন করে নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছিল। প্রায় ১০-১২ দিন আগে সে মাদ্রাসায় যায় এবং বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বলাকা এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়ি ফিরে আসে। তবে হঠাৎ বাড়ি ফেরা নিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের প্রশ্নের কোনো স্পষ্ট উত্তর দেয়নি।
পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী, আরমান মাঝে মাঝে বাবা-মায়ের কথা অমান্য করত এবং কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করত। এ বিষয়টি ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবে সম্পর্কিত কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং মরদেহ উদ্ধার করে। পরিবারের আবেদন অনুযায়ী, ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনাটি এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে, যা এখনও উদঘাটিত হয়নি। পুলিশ ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে এবং ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্বও সামনে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পরিবারের আরো মনোযোগী হওয়া উচিত। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।