নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলায় এক রাতের ব্যবধানে দুই ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাগুলো ঘটেছে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দিবাগত রাতে। এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
প্রথম ঘটনাটি ঘটে পূর্বধলার আগিয়া ইউনিয়নের হাটধলা গ্রামে। মৃত রাম চরণ বিশ্বাসের ছেলে জয়চরণ বিশ্বাস (৭৩) এই ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জয়চরণ বিশ্বাস তার বাড়ির ট্রাংক ও খাটের ড্রয়ার থেকে ৬৫ হাজার টাকা হারানোর কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। এই অর্থ হারানোর সমস্যায় তিনি তার স্ত্রীকে গালিগালাজ করে ঘর থেকে বের করে দেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার পর বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। ভোরে প্রতিবেশী আরতী রানী দাস তাকে বারান্দার সামনে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
একই রাতে দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে নারান্দিয়া ইউনিয়নের জাওয়ানি গ্রামে। সেখানে আবুল হোসেন তালুকদারের ছেলে বোরহান উদ্দিন ওরফে বিল্লাল (১৮) এর ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। ভোরে স্থানীয় আনিসুজ্জামান সোহেলের পুকুরপাড়ের পশ্চিম পাশে পাহারাদার আব্দুল মজিদ মরদেহটি দেখতে পান। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালামের মাধ্যমে খবর পেয়ে শ্যামগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।
পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নূরুল আলম জানান, দুই মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এবং বিস্তারিত তদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তিনি আরও জানান, এই ঘটনা দুটির পেছনে কোনো অপরাধমূলক কার্যকলাপের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এই ধরনের হতাশাজনক ঘটনা মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তার উপর আলোকপাত করে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিবারের মধ্যে আর্থিক সমস্যা ও মানসিক চাপের কারণে এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে বিশেষ করে পরিবারের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সমাজের সকল স্তরে মনস্তাত্ত্বিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করা অপরিহার্য।