ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা যাহের আলভী মুক্তিযুদ্ধ ও ১৯৭১-এর ইতিহাস অস্বীকারকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার ঘোষণা দিয়েছেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বাংলাদেশের ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা যাহের আলভী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অস্বীকারকারী কিংবা মুছে ফেলতে চাওয়া কারও সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যক্তিগত বা সামাজিক সম্পর্ক না রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেল ২টা ৩৩ মিনিটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেন।
পোস্টে যাহের আলভী লেখেন, "যারা ’৭১ অস্বীকার করে, অথবা ’৭১ মুছে ফেলতে চায়, তারা নিজ দায়িত্বে আমার ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে বেরিয়ে যান। হোক সে পরিবার, আত্মীয়স্বজন, ভাই-ব্রাদার, বন্ধু, সরকারি-বেসরকারি লোক, ভক্ত কিংবা জেন-জি সম্প্রদায়— এমন ভক্ত বা অনুসারীও আমি চাই না যারা ’৭১-কে অস্বীকার করে বা মুছে ফেলতে চায়।"
তার এই স্পষ্ট বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। অনেকেই তার অবস্থানকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাহসী ও অনুপ্রেরণাদায়ক উচ্চারণ হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, শিল্পীদের এমন দৃঢ় অবস্থান তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানার এবং তা সংরক্ষণে অনুপ্রাণিত করবে। তবে, অপর এক অংশ সামাজিক সম্প্রীতির বিষয়টি সামনে এনে এমন প্রকাশ্য অবস্থানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
এর আগে চলতি বছরের মে মাসেও যাহের আলভী আলোচনায় এসেছিলেন পাকিস্তানি ধারাবাহিক প্রচারের বিরোধিতা করে। তিনি তখন ঘোষণা দিয়েছিলেন, যে কোনো টেলিভিশন চ্যানেল পাকিস্তানি সিরিয়াল সম্প্রচার করলে সেই চ্যানেলের নাটকে তিনি আর অভিনয় করবেন না। তার যুক্তি ছিল, বিদেশি ধারাবাহিক প্রচার দেশীয় শিল্প ও শিল্পীদের জন্য ক্ষতিকর এবং এটি স্থানীয় নাট্য শিল্পের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সেই সময়ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার মন্তব্য ব্যাপক বিতর্ক ও আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
যাহের আলভী দীর্ঘদিন ধরে টেলিভিশন নাটক এবং ইউটিউব কনটেন্টে নিয়মিত অভিনয় করছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি প্রায়ই সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও জাতীয় ইস্যুতে নিজের মতামত খোলাখুলি প্রকাশ করে থাকেন। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়ে তার অবস্থান সবসময়ই দৃঢ় ও স্পষ্ট।
এই সাম্প্রতিক ঘোষণার মাধ্যমে তিনি আবারও প্রমাণ করলেন যে, শুধুমাত্র বিনোদন শিল্পেই নয়— জাতীয় মূল্যবোধ রক্ষার ক্ষেত্রেও একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তার এই অবস্থান তরুণদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব এবং ’৭১-এর চেতনা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সুযোগ তৈরি করেছে।