দিয়েগো জোটা (Diogo Jota): পর্তুগালের এক প্রতিশ্রুতিশীল ফুটবল তারকা
দিয়েগো জোটা, একজন পর্তুগিজ পেশাদার ফুটবলার যিনি একজন ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলতেন। তিনি লিভারপুল ফুটবল ক্লাব এবং পর্তুগাল জাতীয় দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। মাত্র ২৮ বছর বয়সে, ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তার অকাল প্রয়াণ হয়, যা ফুটবল বিশ্বে শোকের ছায়া ফেলেছে।
দিয়েগো জোটা ৪ ডিসেম্বর ১৯৯৬ সালে পর্তুগালের পোর্তো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয় পর্তুগালের ক্লাব পাসোস দে ফেরেইরাতে। এরপর তিনি স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে যোগ দেন। যদিও অ্যাটলেটিকোর হয়ে তিনি খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি, তাকে পোর্তো এবং উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সে ধারে পাঠানো হয়। উলভারহ্যাম্পটনে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স তাকে ইংলিশ ফুটবলে পরিচিতি এনে দিয়েছিলো।
২০২০ সালে দিয়েগো জোটা ৪১ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে লিভারপুলে যোগ দেন। লিভারপুলের হয়ে তিনি দ্রুতই দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন এবং জার্গেন ক্লপের অধীনে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখান। লিভারপুলে থাকাকালীন তিনি প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ এবং দুটি লিগ কাপ জেতেন। তার গতি, ফিনিশিং এবং আক্রমণাত্মক খেলার ধরণ তাকে ভক্তদের কাছে প্রিয় করে তোলে। লিভারপুলের হয়ে তিনি মোট ১৮২টি ম্যাচে ৬৫টি গোল করেন।
পর্তুগাল জাতীয় দলের হয়ে দিয়েগো জোটা ২০১৯ সালে অভিষেক করেন। তিনি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সতীর্থ হিসেবে পর্তুগাল দলের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। দেশের হয়ে তিনি ৪৯টি ম্যাচ খেলেছেন এবং ১৪টি গোল করেছেন। পর্তুগালের হয়ে তিনি দু'বার উয়েফা নেশন্স লিগ শিরোপা (২০১৯ ও ২০২৫) জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
দিয়েগো জোটা ব্যক্তিগত জীবনেও সুখী ছিলেন। মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই তিনি তার দীর্ঘদিনের প্রেমিকা রুতে কারদোসোকে বিয়ে করেছিলেন। এই দম্পতির তিনটি সন্তানও ছিল। কিন্তু, ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে স্পেনের জামোরা প্রদেশের এ-৫২ মহাসড়কে এক ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায় তিনি এবং তার ভাই আন্দ্রে সিলভা নিহত হন। এই মর্মান্তিক ঘটনায় ফুটবল বিশ্ব একজন তারকাকে হারায়, যা তার ভক্ত এবং সতীর্থদের মধ্যে গভীর শোকের সৃষ্টি করেছে।