close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ..

জাকারিয়া রানা avatar   
জাকারিয়া রানা
জাকারিয়া রানা
জেলা প্রতিনিধি

মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অব্যবস্থাপনা ও টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, যা স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় প্রভাব ফেলছে।..

মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সঠিক চিকিৎসাসেবা না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনগণের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। সাম্প্রতিক তদন্তে উঠে এসেছে, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টেন্ডার দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ, যা স্বাস্থ্যসেবার গুণগত মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে আসছে।

উপজেলা প্রেস ক্লাবের কয়েকজন সদস্য গত ১৪ আগস্ট মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহার সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করেন। তারা অভিযোগ করেন যে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন সেবার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হচ্ছে এবং তিন অর্থবছর ধরে একই ঠিকাদার কোম্পানি মেসার্স হাজী এন্টারপ্রাইজ ডায়েট সাপ্লাইয়ের দায়িত্ব পালন করছে।

ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, "এমন কোনও কাগজপত্র আমার কাছে নেই যার ভিত্তিতে একই ঠিকাদার বারবার এই কাজ পেতে পারে। তবে এটি একটি অডিট আপত্তি যোগ্য বিষয়।"

পটুয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, "এ ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা তবে সব কিছু জেনে জানাবো।"

একজন নাম না জানা স্টাফ অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের জুন মাসে টেন্ডার হওয়ার কথা থাকলেও, তৎকালীন হেড ক্লার্ক রিয়াজ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তেংমং মোটা অংকের বিনিময়ে পূর্বের ঠিকাদারকে পুনরায় দায়িত্ব দেন।  মান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। সরকারি দালালের কার্যক্রমের কারণে রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। এছাড়া, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশেপাশে অনুমোদিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতালের এক কিলোমিটারের মধ্যে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থাকতে পারবে না। কিন্তু মির্জাগঞ্জে হাসপাতালের পাঁচারের মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা সিভিল সার্জন ও টি এইচের পরিদর্শনেও অনুমোদিত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক ৫০ টি হাসপাতালে বৈকালিন প্রাক্টিসের অনুমোদন থাকলেও মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে বিকালে এখানে সকল ডাক্তারদের চেম্বার বসে। এই প্রক্রিয়ায় রোগীরা বিভ্রান্ত হয় এবং চিকিৎসা সেবার মানও হ্রাস পায়।

সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে সরবরাহকৃত ঔষধের সঠিক বিতরণ না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা, প্যাথলজি ও রেডিওলজি বিভাগের উন্নয়ন, এবং স্টাফদের নিয়মিত কাউন্সিলিং প্রয়োজন।

এছাড়া, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য দক্ষ স্টাফদের সংকট বিদ্যমান। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং অপারেশন থিয়েটার চালু থাকলেও কার্যকর না হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় জনগণ।

সাধারণ জনগণ মনে করে, স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সিন্ডিকেট ও দালাল মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, সরকারি চাকরী বিধিমালা অনুযায়ী যারা দীর্ঘদিন ধরে একই স্থানে কর্মরত, তাদের বদলি করা উচিত।

অবশেষে, স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা মান উন্নয়নের প্রত্যাশা করছেন স্থানীয়রা।

No comments found