খুলনা, ১৩ আগস্ট: খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির ২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সমিতির বিশেষ সাধারণ সভায় উপস্থাপিত অডিট রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশ পায়। অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিগত পাঁচ বছরে সমিতির তৎকালীন সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বাধীন সময়ে এই অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে।
অডিট রিপোর্টের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সমিতির তহবিল থেকে ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ভাউচারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে। এছাড়াও, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে অনুমোদনবিহীন বিনিয়োগ এবং ব্যক্তিগত ঋণের নামে তহবিল থেকে অর্থ সরানো হয়েছে। অডিটের ৭৮ পৃষ্ঠাব্যাপী প্রতিবেদনে ২৬টি অনিয়মের বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশেষ সাধারণ সভায় সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট নূরুল হাসান রুবা অডিট রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। সভায় উপস্থিত সাধারণ সদস্যরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পক্ষে মত দেন। সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেকের প্রস্তাবে সিনিয়র সিভিল আইনজীবীদের নিয়ে ১১ সদস্যের একটি প্যানেল গঠন করে মামলার আর্জি লেখার সিদ্ধান্ত হয়।
অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম বর্তমানে খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি। অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি ২০২০ সাল থেকে আইনজীবী সমিতি নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং অর্থ আত্মসাতের পাশাপাশি অ্যাডভোকেটদের ওপর নির্যাতন চালাতেন। ইতোমধ্যে তার সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে এবং দুদক তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সমিতির তহবিল ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত বাৎসরিক অডিট, অনলাইন অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম চালু এবং আর্থিক লেনদেন সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এই দুর্নীতি ঘটনার প্রেক্ষিতে সমিতির বর্তমান নেতৃবৃন্দ আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্তের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে সকল আর্থিক লেনদেনের প্রমাণপত্র সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।