বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) নেত্রকোণা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি অনীক মাহবুব চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শামসুল হুদা শামীম স্বাক্ষরিত ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দুয়া সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
ঐ দিন রাতেই কলেজ শাখা ছাত্রদলের একাংশ নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। তাঁদের অভিযোগ, যোগ্য ও ত্যাগী ছাত্রনেতাদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত পরিবারের অযোগ্য ব্যক্তিদের পদ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এ কমিটি বাতিল না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে ছাত্রদলের একাংশ নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে কলেজ প্রাঙ্গণে আবারও বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরবর্তীতে পৌরশহরে মিশ্রভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া শুরু হয়। এতে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়দের মতে, কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ চলমান। বিষয়টি দলীয়ভাবে বসে আলোচনা করে সমাধান করা সম্ভব হলেও রাস্তায় শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে পরিস্থিতি অশান্ত করা হচ্ছে, যা জননিরাপত্তার জন্য হুমকি।
এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দুয়া থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। তবুও স্থানীয়দের আশঙ্কা, যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে রোববার বিকেলে (১০ আগস্ট) নেত্রকোণা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি অনীক মাহবুব চৌধুরী বলেন— "এই কমিটি গঠনের জন্য গত তিন মাস আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছি। কেন্দুয়া উপজেলা, পৌরসভা ও কলেজ আহ্বায়ক-সদস্য সচিবসহ স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে শত শত আবেদন থেকে যাচাই-বাছাই করে ৩১ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাদের নির্বাচিত করা হয়েছে, তাঁরা দীর্ঘদিন কলেজ ছাত্রদলের কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন, আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ, জামায়াত-শিবির বা অন্য কোনো বিরোধী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ নেই। একই গ্রামের দুই নেতাকে পদ দেওয়া হলেও তা আমাদের কাছে কোনো সমস্যা নয়, কারণ কমিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক—গ্রামভিত্তিক নয়।"
তিনি আরও বলেন— "যোগ্য ও আন্দোলনমুখী ছাত্রদের মধ্য থেকেই সেরা দু’জনকে নেতৃত্বে আনা হয়েছে। যদি কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ আসে—যেমন অন্য সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকা বা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা—তাহলে আমরা অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।"
দেশীয় অস্ত্র মহড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “এ ধরনের মহড়া ছাত্রদলের নয়। আমাদের কমিটি শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত, গ্রামবাসী বা অন্যরা এখানে জড়িত হওয়া উচিত নয়। মিশ্রভাবে কেউ যদি মহড়া দেয়, তাহলে অন্য সংগঠন বা ব্যক্তির অনুপ্রবেশ হয়েছে। যদি ছাত্রদলের কেউ জড়িত থাকে, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”