ঘিওর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বিরুদ্ধে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার "কাবিটা প্রকল্প" এর টাকার অপব্যবহার এবং সরকারি অর্থ তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। একাধিক স্থানীয় সূত্র এবং প্রমাণাদি অনুযায়ী, সরকারি বরাদ্দকৃত প্রায় ৩৩ লাখ ১২ হাজার টাকার মধ্যে বড় একটি অংশ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধির মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে গেছে।
২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের কাবিটা প্রকল্পের আওতায় ঘিওর উপজেলার ৯টি রাস্তা পুনঃনির্মাণের কাজ দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। তবে, সরেজমিনে পরিদর্শনে উঠে আসে, কাগজে কলমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলেও বাস্তবে অধিকাংশ কাজই অসম্পূর্ণ এবং নিম্নমানের। বিশেষত, নালী ইউনিয়নের বাথইমুড়ি পূর্বপাড়া থেকে মামুনের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজের জন্য বরাদ্দ ১ লাখ টাকার কোনো কাজই হয়নি। একইভাবে, ঘিওর ইউনিয়নের রসুলপুর থেকে বড় রামকান্তপুর পর্যন্ত রাস্তার পুনঃনির্মাণের জন্য বরাদ্দ ১২ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় শুধুমাত্র ভেকু দিয়ে পুরাতন রাস্তার উপর মাটি ফেলা হয়েছে, যার ফলে রাস্তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গেছে।
এছাড়া, ঘিওর ইউনিয়নের পশ্চিম দোতরা আবুল হাসেমের বাড়ি থেকে বিএডিসি ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য ৬ লাখ টাকার বরাদ্দে কাজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। এসব রাস্তার কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রকল্পের টাকার বেশিরভাগ অংশ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনার পর, স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, "টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের টাকা সাধারণ মানুষকে সাহায্য করার জন্য বরাদ্দ করা হয়, কিন্তু তা এখন সরকারী কর্মকর্তাদের এবং রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে চলে যাচ্ছে।" স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, এ ধরনের অনিয়মের কারণে খেটে খাওয়া দিনমজুররা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা সুলতানা নাসরীন এই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে জানান, "যদি কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, তবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" তবে, স্থানীয়দের দাবি, এই ধরনের দুর্নীতি অবিলম্বে বন্ধ না হলে গ্রামের সাধারণ মানুষের দুর্দশা বাড়বে আরও।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, কি পদক্ষেপ নেয়া হবে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে? সরকারী অর্থের অপব্যবহার রোধে কঠোর পদক্ষেপ না নেয়া হলে, ভবিষ্যতে এই ধরনের অনিয়ম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আরও বাড়বে।
		
			


















