জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি ঘোষণা করেছে। সংস্থাটির খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সমন্বিত শ্রেণিবিন্যাস (আইপিসি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ অনাহার, চরম দারিদ্র্য এবং মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদনে এই মানবিক বিপর্যয়কে ‘সম্পূর্ণ মনুষ্যসৃষ্ট’ এবং প্রতিরোধযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইপিসি-র তথ্য অনুযায়ী, গাজা শহর এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দেইর আল-বালাহ এবং খান ইউনিসের মতো অঞ্চলেও পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রকাশিত বিভিন্ন চিত্রে দেখা গেছে, নারী ও শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ ত্রাণের জন্য মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করছে এবং সামান্য খাবারের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছে।
এদিকে, ইসরায়েল জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা ও পক্ষপাতদুষ্ট’ আখ্যা দিয়ে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সংশ্লিষ্ট বিভাগ (কোগাট) দাবি করেছে, প্রতিবেদনটি হামাসের দেওয়া ‘অসম্পূর্ণ ও একপেশে’ তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তাদের মতে, ইসরায়েলের ব্যাপক মানবিক ত্রাণ প্রচেষ্টা প্রতিবেদনে উপেক্ষা করা হয়েছে।
আইপিসি জরুরি ভিত্তিতে সংকট মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, আর সামান্য বিলম্ব হলেও দুর্ভিক্ষজনিত মৃত্যু ‘অগ্রহণযোগ্যভাবে’ বেড়ে যাবে।
এই মানবিক সংকট বিশ্বের সামনে একটি কঠোর বাস্তবতা তুলে ধরেছে, যেখানে রাজনৈতিক মতবিরোধের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের জীবন বাঁচানোই প্রধান বিবেচ্য হওয়া উচিত।