গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত জাভান হোটেল অ্যান্ড বারে আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) দক্ষিণ বিভাগের একটি দল। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাত ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, Channel S-এর গত বুধবার প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়।
ডিবি ডিসি (পূর্ব) অশোক কুমার বলেন, প্রতিবেদনের তথ্য যাচাই এবং অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিতের জন্যই এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
প্রায় দেড় ঘণ্টা স্থায়ী এ অভিযানের পর ডিবি দক্ষিণ জানান, “বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি, তবে তদন্তে ইয়াবা বা অসামাজিক কার্যকলাপের কোনো প্রমাণ মেলেনি।”
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ডিবি পুলিশ একটি মাইক্রোবাসে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। কিন্তু অভিযান শেষ হওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা ২৫ মিনিট পর, রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে, কালের কণ্ঠের প্রতিবেদক আল আমিন হোসেন হোটেলের সামনে থেকে “ডিবির অভিযান চলছে” বলে লাইভ সম্প্রচার শুরু করেন।
জাভান হোটেলের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবেদক নিজের পরিচয় না দিয়ে ভিডিও ধারণ করছিলেন, এজন্য তাকে বাধা দেওয়া হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আল আমিন হোসেন তখন কোনো টিভি ক্যামেরা বা বুম ব্যবহার করেননি। নিষেধাজ্ঞার পর তিনি এক সহযোগীকে নিয়ে মোটরবাইকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
কিছুক্ষণ পর আল আমিন হোসেন এবং Channel S-এর চিফ রিপোর্টার মোস্তাফিজ রুম্মন পুনরায় হোটেলের সামনে ফিরে এসে কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে লাইভ প্রচার করেন।
এ নিয়ে জাভান হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সায়মন খান অভিযোগ করেন, আল আমিন হোসেন আমার হোটেলের মালিকানা নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছেন। আমি বৈধভাবে এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি।
তিনি আরও জানান, শেখ বাদল ভবনের মালিক হলেও হোটেল পরিচালনার সঙ্গে বর্তমানে যুক্ত নন।
সায়মন খান দাবি করেন, Channel S-এর পরিচালক মেহেদী হাসান মিঠু, যিনি শেখ বাদলের আত্মীয়, সম্প্রতি অবৈধভাবে হোটেল পরিচালনা পর্ষদে যোগ দিতে চাইছেন।
“আমি আপত্তি জানালে তিনি আমাকে ফোন করে হুমকি দেন–হোটেল বন্ধ করে দেবেন। এমনকি মিথ্যা সংবাদ প্রচারেরও হুমকি দেন,” বলেন সায়মন খান।
তিনি প্রমাণ হিসেবে নিজের হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের স্ক্রিনশট দেখান এবং জানান, এই বিষয়ে তিনি শিগগিরই থানায় অভিযোগ করবেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জাভান হোটেল অ্যান্ড বার টঙ্গীর অন্যতম পরিচিত হোটেল হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক কিছু অভিযোগের কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিষ্ঠানটির ওপর নজরদারি আরও বাড়িয়েছে।
ডিবির অভিযান ও পরবর্তী ঘটনাকে কেন্দ্র করে টঙ্গীতে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো অভিযোগ–প্রতিউত্তরের মধ্যে থাকলেও পুলিশ বলছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।