আশাশুনিতে পূর্ব শত্রুতার জেরে এক মসজিদের ইমামের ৫ মাসের অন্তঃসত্তা স্ত্রীকে বেধড়ক মারপিট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার ৬দিনের মাথায় ইমামের স্ত্রী মৃত পুত্র সন্তান প্রসব করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে থানা পুলিশকে জানালে,পুলিশ মা ও মৃত সন্তানকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ইমামের স্ত্রী হালিমাকে আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং মৃত সন্তানকে পোস্টমর্টেম করতে সাতক্ষীরায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বল্লপুর গ্রামে। এ ব্যাপারে হালিমার স্বামী ও মৃত সন্তানের পিতা মসজিদের ইমাম হাফেজ রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করে আশাশুনি থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছে। লিখিত এজাহার সূত্রে জানা গেছে,মধ্যম একসরা গ্রামের মৃত মানিক গাজীর পুত্র হাফেজ রফিকুল ইসলাম বর্তমানে রাধাবল্লভপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামীরা পূর্ব হতে রফিকুল ও তার পরিবারের সদস্যদের পথে ঘাটে পেয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানী,ক্ষয় ক্ষতি,অত্যাচার,নির্যাতন,মিথ্যা অপবাদ দেওয়া সহ মারপিট করতে উদ্যত হয় ও খুন জখম করার হুমকি দিয়ে আসিতেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এরই জের ধরে আসামীরা ও তাদের সাথে থাকা আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন বে-আইনীভাবে পূর্ব পরিকল্পিত মোতাবেক হাতুড়ী,লোহার রড,বাঁশের লাঠি,জি আই পাইপ দিয়ে (৯ আগস্ট) শনিবার সকাল অনুমান ১০ ঘটিকায় দিকে রফিকুলের বাড়িতে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে করে বিভিন্ন অশ্লীল গালিগালাজ করতে থাকে। রফিকুল বাড়িতে না থাকায়,তার অনুমান ৫/৬ মাসের গর্ভবতী স্ত্রী হালিমা খাতুন (৩৭) আসামীদেরকে গালিগালাজ না করার জন্য মৌখিকভাবে নিষেধ করে। ২নং আসামী লিটনের হুকুমে আসামীরা একযোগে রফিকুলের স্ত্রীর উপর চড়াও হয়ে বসত ঘরের মধ্যে উঠে তাকে এলোপাতাড়ী মারপিট করে দুই হাতে পায়ে সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে নিলা ফোলা জখম করে। ১নং আসামী মিলন জি.আই পাইপ দিয়ে আমার স্ত্রীকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করতে গেলে স্ত্রী বারান্দার মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে আসামী তার হাতে থাকা জি,আই পাইপ দিয়ে আমার স্ত্রীর তলপেটে,বুকে পিটে সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে বেদমভাবে মারপিট করে গুরুতর জখম করে। ৩ নং আসামী রোকন আমার স্ত্রীর তলপেটে লাথি মেরে জখম করে। আসামীদের মারপিটে আমার স্ত্রীর গর্ভে থাকা অনুমান ৫/৬ মাসের বাচ্চা আঘাত প্রাপ্ত হয়ে শরীর দিয়ে রক্ত ক্ষরণ হতে থাকে। আসামীরা একটি স্বর্ণের চেইন,কানের দুল জোরপূর্ব খুলে নেয় যার আনুমানিক মূল্য এক লক্ষ দশ হাজার টাকা। এবং নগদ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং বসতবাড়ির ঘেরাবেড়া ভাঙচুর করে চল্লিশ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে। আমার মেয়ে নাইমা খাতুন ঠেকাতে আসলে তাকেও মারপিট করে। আমি সংবাদ পেয়ে দ্রুত বাড়িতে এসে স্ত্রীকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করাই। আসামীদের মারপিটে আমার গর্ভবর্তী স্ত্রী হালিমা খাতুন (৩৭) গুরুতর আহত হয়ে পেটের ব্যাথায় ছটফট করতে থাকে ও এক পর্যায়ে ১৪ আগস্ট সকাল অনুমান ৮ ঘটিকার সময় একটি মৃত ছেলে সন্তান প্রসাব করে। আমি থানা পুলিশের সংবাদ দিলে পুলিশ আমার বাড়িতে আসে ও ঘটনা শোনে। আমি পুলিশ ও সাক্ষীদের সহ স্থানীয় লোকজনের সহায়তা একই দিন আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাত অনুমান ১১ ঘটিকার সময় আশাশুনি হাসপাতালে ভর্তি করি ও মৃত শিশু সন্তানের লাশ পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। ভুক্তভোগী হাফেজ রফিকুল ইসলাম আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ শামসুল আরেফিন জানান,লিখিত এজাহার পেয়েছি,তদন্তপূর্বক মামলা নেওয়া হবে,প্রস্তুতি চলছে।