বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আরেকটি গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে টার্গেট করে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে, যা আসন্ন নির্বাচনের পরিবেশকে নষ্ট করার প্রচেষ্টা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পরও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই থেমে নেই। বরং নতুন করে আরেকটি গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে টার্গেট করেছে, যারা নানাভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
১২ আগস্ট, মঙ্গলবার সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর ৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বনানী কবরস্থানে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, “আমরা অতীতেও দেখেছি—১৯৮৬, ১৯৯৪, ১৯৯৫, ১৯৯৬ এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৫ আগস্টের পর—তারা বিভিন্ন অজুহাতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে শক্তিশালী করেছে। এখনো আমরা দেখছি, ধর্মের নামে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে এবং বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তারা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। সামনের নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে এসব ষড়যন্ত্র চলছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, পরাজিত ফ্যাসিবাদের সহযোগীরা দেশের বাইরে অবস্থান করে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কালো টাকা ও অবৈধ অস্ত্র এনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে। “গণতান্ত্রিক শক্তি কোনো কর্মসূচি দিলেই তারা অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে নাশকতা ও চক্রান্তে লিপ্ত হয়। চট্টগ্রামে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে—এমন ঘটনাই প্রমাণ করে তারা শান্তি চায় না,” বলেন রিজভী।
তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছেন এবং নির্বাচন কমিশন শিগগিরই তফসিল ঘোষণা করবে। কিন্তু এর মধ্যেই নানা মহল কূটকৌশল ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে।
রিজভী বলেন, “আমরা একটি আদর্শের জন্য লড়াই করেছি। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আপসহীন লড়াই করেছেন, জাতিকে ও নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আমাদের লক্ষ্য সবসময় ছিল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। সেই কারণেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটেছে। কিন্তু এর পরও ফ্যাসিবাদ কায়েমের চেষ্টা থেমে নেই।”
আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। তিনি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদ। শেখ হাসিনা সরকারের নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইয়েদুল আলম বাবুল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, মহানগর উত্তর বিএনপির এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।