close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অনুমোদনহীন 'মারমেইড গ্রিন সিটি' প্রকল্প বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। জমি আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেওয়া ..

Dr Md Jonaid avatar   
Dr Md Jonaid
গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (GDA) অনুমোদন ছাড়াই পরিচালিত ‘মারমেইড গ্রিন সিটি’ প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে..

গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (GDA) সম্প্রতি 'মারমেইড গ্রিন সিটি' নামক একটি প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছিল এবং এর বিরুদ্ধে জমি আত্মসাৎ, অনুমোদনবিহীন প্লট বিক্রি এবং গ্রাহক প্রতারণার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। 

প্রকল্পটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পেছনে প্রধান কারণ হিসাবে GDA উল্লেখ করেছে যে, এটির কার্যক্রম স্থানীয় জনগণের সম্পত্তির অধিকার ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে প্রলোভনমূলক প্রতিশ্রুতি দিয়ে জমি বিক্রি করছে, যা পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। 

'মারমেইড গ্রিন সিটি' ছাড়াও প্রবাসী পল্লি, রিদিম সিটি, তেপান্তর, নর্থ সাউথ গ্রুপের মতো আরও কিছু প্রকল্প গাজীপুরের পুবাইল, উলুখলা, নাগরি, কালিগঞ্জ, তেরমুখসহ আশপাশের এলাকায় চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পগুলো বিভিন্নভাবে পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে কৃষি জমি দখল করে এবং বালি ভরাট করে মাছের অভয়ারণ্যগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এসব প্রকল্পের কারণে তাদের জীবিকা এবং পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। জমির মালিকরা প্রায়শই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন এবং প্রকল্পের ডেভেলপাররা প্রাথমিকভাবে প্রতিশ্রুত সুবিধা পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরণের প্রকল্পগুলি পরিবেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর হতে পারে। স্থায়ীভাবে কৃষি জমি দখল এবং জলাভূমি ভরাটের ফলে স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। 

গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা। তারা মনে করেন, উন্নয়নের নামে এই ধরণের অপব্যবহার বন্ধ করতে হলে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। GDA-এর প্রধান কর্মকর্তা বলেছেন, "আমরা জনগণের স্বার্থে কাজ করছি এবং কেউই যদি নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

তবে, এই ধরনের পদক্ষেপের পরও অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ এবং পর্যবেক্ষণ না করলে ভবিষ্যতে এই ধরনের সমস্যা আরও বাড়তে পারে। 

স্থানীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে এই ধরনের প্রকল্পের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা আশা করছেন, এই পদক্ষেপটি অন্যান্য অননুমোদিত প্রকল্পগুলিকে প্রতিহত করতে একটি উদাহরণ হিসেবে কাজ করবে এবং গাজীপুরের পরিবেশ সুরক্ষার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। 

এই পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য স্থানীয় প্রশাসন, জনগণ এবং পরিবেশবিদদের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

No comments found