close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

চট্টগ্রামে ড. হাছান মাহমুদের ভ্যানগার্ড ইকরাম এখন বিজেপির চট্টগ্রাম জেলা নেতা!..

Nezam Uddin avatar   
Nezam Uddin
চট্টগ্রামে ড. হাছান মাহমুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইকরাম হোসেনের বিজেপির জেলা আহ্বায়ক হিসেবে নিযুক্তি নিয়ে বিতর্ক।..

 

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার ফ্যাসিবাদের দোসর, ড. হাছান মাহমুদের ভ্যানগার্ড এস. এম. ইকরাম হোসেন এখন রাতারাতি বিজেপির চট্টগ্রাম জেলা আহ্বায়ক বনে গেছে! ফেসবুকে নাম পাল্টিয়ে শেখ ইকরাম নামে পরিচিতি দিচ্ছে।
সেলফি আর তেলবাজির রাজনীতির ধারা মনে করলে সামনে আনতে পারেন বিতর্কিত এস.এম ইকরাম হোসেন কে। রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা ৮নং ওয়ার্ডের সৈয়দ বাড়ির বাসিন্দা জনৈক মুছা মিয়ার ধুরন্ধর পুত্র ইকরাম চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি খালেদ মাহমুদের তল্পিবাহক, রাঙ্গুনিয়া যুবলীগের সভাপতি আরজু শিকদার ও মেয়র শাহজাহান শিকদারের ভাতিজা পরিচয় দিয়ে বিগত সময়ে নানা অপকর্ম করে দাফিয়ে বেড়াতো।  সে কখনো নিজেকে অনলাইন উদ্যোক্তা, কখনো সাংবাদিক, কখনো সরকারি চাকরিজীবী, আবার কখনো আওয়ামী রাজনীতি নেতার সাথে ছবি তুলে  প্রভাবশালী নেতা!  

স্বৈরাচারের আমলে লুটেরাদের সহযোগিতায় নিয়োগ বাণিজ্য, দালালি, দুর্নীতি ও অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে সে অনেক অবৈধ টাকার মালিক হয়। এসব অবৈধ টাকার বিনিময়ে ও হাসান মাহমুদের পরামর্শে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির চট্টগ্রাম জেলা আহ্বায়ক কিনে নিয়ে ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন করে জুলাই বিপ্লব বিরোধী ষড়যন্ত্র করার পরিকল্পনা করেছে। সে ২০২৪ ডামি নির্বাচনের বৈধতার জন্য ড. হাছান মাহমুদ ও আবেদ আলীর অর্থায়নে পূর্ববর্তী ভোটাধিকার আদায়ের আন্দোলনকে অগ্নিসন্ত্রাস আখ্যা দিয়ে মানববন্ধন করে এবং ডামি নির্বাচনে ভোটদানে উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। যা পত্রিকায় প্রচারও করা হয়েছে।

রাঙ্গুনিয়া থানায় যার বিরুদ্ধে সর্বশেষ প্রতিবন্ধীর চিকিৎসার বিল আত্মসাৎ করার নামে অভিযোগ দায়ের হয় এবং রাঙ্গুনিয়ার প্রবাসী এক রেমিটেন্স যোদ্ধাকে ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার আমলে দেশে আসলে এনএসআই , ডিজিএফআই দিয়ে তুলে নেওয়ার হুমকি দেয় এই শেখ ইকরাম হোসেন সোহেল। বাংলাদেশে আসলে হেনস্তা করবে বলে অভিযোগ উঠে এমনকি  এই প্রবাসীকে হুমকি দিতে গিয়ে   একটা ফোন আলাপে বলতে শুনা যায়-" আমি হাসান ভাইয়ের (রাঙ্গুনিয়ার ফ্যাসিবাদী এমপি ও আওয়ামী মন্ত্রী) নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পুরো চট্টগ্রাম বিভাগে দায়িত্বে ছিলাম। হাছান ভাইয়ের সাথে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে রাসেল রাসু (রাঙ্গুনিয়া ছাত্রলীগের সভাপতি) এবং যুবলীগের সিনিয়র নেতা আমাকে সম্মান করে ভয় করে" আমি একটা ফোন দিলে এক সেকেন্ডও লাগবে না তাদের তুলে আনতে।
শুধু তাই নয় বিগত সময়ে আওয়ামীলীগ  যুবলীগ, রাঙ্গুনিয়া ছাত্রলীগের কর্ণধার পরিচয় দিয়ে বিরোধী দলের (বিএনপি-জামাত) মতাদর্শের মানুষদেরকে হয়রানি করা ও স্বৈরাচারের আমলে নানা অপকর্মে অভিযুক্ত সেই ইকরাম এখন সদ্য ঘোষিত ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ এর বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির চট্টগ্রাম জেলা কমিটিতে আহ্বায়ক কিভাবে হয়, সেটাই রাজনীতির সচেতন মহলের অনেকের বিরাট প্রশ্ন।

সরেজমিনে রাঙ্গুনিয়ায় খবর নিয়ে দেখা যায়- তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ, সর্বশেষ বেতাগী ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলাম (৬২) নামে এক বয়োবৃদ্ধ রাঙ্গুনিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তার ছেলে কাতার প্রবাসীকে বিভিন্ন হুমকি-দমকি দেয় অনলাইনে সাইবার বুলিং করার জন্য। ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের মহাসচিব, আওয়ামী দালাল আবেদ আলীর নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে  হাসান মাহমুদের পেইড এজেন্ট হয়ে চট্টগ্রাম বিভাগে নেতৃত্ব দেয় বলে তার একটা অডিও গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। 

রাঙ্গুনিয়া মডেলা থানার সাথে যোগাযোগ করলে জানা যায়- বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে ব্যবস্থা নিবে রাঙ্গুনিয়া থানা।এই ছাড়া তার বিরুদ্ধে "কিউরা হেলথ" নামে অনলাইন পেজ খুলে যৌন বিষয়ক মেডিসিনসহ বিভিন্ন নামে বেনামে অনলাইনে ওষুধ বিক্রির অভিযোগ এসেছে। এই বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া সাদিয়া ইসলাম নামে এক মহিলা বলেন- চোখ জুরালে এই অনলাইন পেজে বিজ্ঞাপন দেখে নক দিলে আমাকে বিভিন্নভাবে বুলিং করেন। পেজে গিয়ে দেখা যায় স্বাস্থ্য পেজের নাম দিয়ে বিমানের টিকেট বিক্রি, অনলাইন নিউজ এজেন্সিসহ ভূইফোড় বিজ্ঞাপন। এই বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে  জানতে চাইলে বলেন- বিএসটিআই এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া বেনামে চিকিৎসার নামে প্রতারণা ধোকাবাজদের আমরা দ্রূত অভিযান পরিচালনা করবো।

 এস এম ইকরাম ২০২৩ সালের ২৩ই ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ওয়াল্ড ট্রের্ড সেন্টারে "ডামি নির্বাচনী" বৈধতার জন্য পর্যবেক্ষক প্রশিক্ষণ আয়োজন করে ও সার্ক মানবধিকার সংস্থার অনুষ্ঠান করে নিজে চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক বনে যায়। নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দাবি করে পরিচয় দিয়ে বিগত সময়ে চট্টগ্রামে বিভিন্নস্থানে হাতিয়ে নিয়েছে অনেক টাকা। প্রাইভেট কারে চড়ে মানবধিকার স্টিকার লাগিয়ে চষে বেড়াচ্ছে এখনো চট্টগ্রামে। তবে এবার পরিচয় অন্যরকম নিজেকে চট্টগ্রাম বিভাগের বিজেপি আহবায়ক বলে সব জায়গায় জাহির করে আসছে বলে অভিযোগ।
এই বিষয়ে ইকরামের মুঠোফোনে একাধিবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
এই ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর আইয়ুব  বলেন- ২০১৬ সালে এই ইকরামের বিরুদ্ধে এলাকায় ইভটিজিং এবং কিশোর গ্যাং তৈরির অভিযোগ আসলে আমি সাবধান করে দিলে সেই পরে ফেসবুকে  আমার বিরুদ্ধে উল্টাপাল্টা মিথ্যাচারে লিপ্ত ছিল এলাকাই বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপট  দেখিয়ে  বিভিন্ন হেনস্থা করতো।
তার বিষয়ে একই এলাকার ৮নং পৌরসভার যুবনেতা  মেহেদী হাসান টিপু বলেন- সেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠনের পরিচয় দিয়ে আওয়ামী কার্যক্রমে লিপ্ত ছিল  এলাকায় ফ্যাসিস্টদের মুখপত্র ছিল, এখন শুনছি বিজেপি থেকে রাঙ্গুনিয়ার আওয়ামলীগের ছায়া  হয়ে এমপি প্রার্থী হবে।
রাঙ্গুনিয়ার বিএনপি  আহবায়ক  অধ্যাপক কুতুব উদ্দীন বাহার বলেন- বিগত হাসিনার আমলে দুর্নীতিবাজ হাসান মাহমুদের পরিক্ষিত সৈনিকগুলো এখন বিভিন্ন জায়গায় নামে বেনামে দেশের ষড়যন্ত্র লিপ্ত হচ্ছে, এই ধরণের বর্ণচোরা মানুষগুলোর ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়াবাসী শক্ত অবস্থান নিবে। 
জিয়া মঞ্চের রাঙ্গুনিয়া প্রচার সম্পাদক কামরুল ইসলাম বলেন- স্বৈরচার আমলে এরাই ডামি নির্বাচনকে বৈধতা দিতে দেশটাকে লুটপাট করেছিল, যখন নেতা পলাতক তখন  সুশীল সেজে দল পরিবর্তন করে দেশ ও মাতৃভূমির বিরুদ্ধে গভীরষড় যন্ত্রের লিপ্ত হচ্ছে, এখনো রাঙ্গুনিয়া অনেক জায়গায় ফ্যাসিস্টদের কালো ছায়া আমরা দেখতে পাচ্ছি।

No comments found