ঢাকা, ১৩ জুলাই:
চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়েরকৃত একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন। রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে তিনি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন।
আদালতে হাজিরার সময় অপু বিশ্বাস মুখে মাস্ক ও বোরকা পরে ছিলেন। প্রথমে আদালত তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি মাথা নাড়িয়ে চুপ থাকেন এবং কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হাসেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকজন আইনজীবী অভিযোগ করে বলেন, “অপু বিশ্বাস ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী। টাকার বিনিময়ে মঞ্চে শেখ হাসিনাকে প্রচারে সহায়তা করেছেন।”
পরবর্তীতে অপু বিশ্বাস আদালতে বলেন,
“আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করতে গিয়ে অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না, করতেও চাই না।”
আইনজীবীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি এমপি হওয়ার কথা চিন্তা করেছিলাম এক সময়, কিন্তু সেটা আমার জীবনের খারাপ সময় ছিল। আমার একটি সন্তান রয়েছে, ওকে নিয়ে আমাকে ভাবতে হয়।”
আদালত শুনানি শেষে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত অপু বিশ্বাসকে জামিন প্রদান করেন।
এর আগে গত ২ জুন, হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নিয়েছিলেন অপু বিশ্বাস। জামিনের মেয়াদ শেষের দিকে থাকায়, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি সিএমএম কোর্টে হাজির হয়ে জামিননামা দাখিল করেন। তার আইনজীবী আবুল বাশার কামরুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এনামুল হক নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ভাটারা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় অপু বিশ্বাস, আসনা হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের ২৮৩ জন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, এসব তারকা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে অর্থসহায়তা দিয়েছেন এবং তাদের প্রচারে অংশ নিয়েছেন।
এ মামলায় গত ১৮ মে আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হলে তা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে তিনি ২০ মে জামিন পান।