close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ছাত্র প্রতিনিধিদের দুর্নীতিতে জড়ানোর দায় প্রধান উপদেষ্টার: রাশেদ খান..

Mamun Sorder  avatar   
Mamun Sorder
Gono Odhikar Parishad leader Rashed Khan alleges that due to Chief Adviser Dr. Muhammad Yunus’s negligence, student representatives in various offices have become involved in extortion and corruption...

গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান অভিযোগ করেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অবহেলায় বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পাওয়া ছাত্র প্রতিনিধিরা চাঁদাবাজি ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে।

গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান অভিযোগ করেছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অবহেলা ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পাওয়া ছাত্র প্রতিনিধিদের একটি অংশ চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং নানা ধরনের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার ফরিদপুর প্রেসক্লাবে জেলা গণ অধিকার পরিষদ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ অভিযোগ তোলেন। ‘২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ২০২৪ সালের সফল গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে করণীয়’— এই শিরোনামে আয়োজিত সভায় উপস্থিত ছিলেন দলীয় নেতাকর্মীরা ও স্থানীয় পর্যায়ের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি।

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাশেদ খান বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় যেসব ছাত্রনেতারা দেশের গর্ব হয়ে উঠেছিলেন, তাদের অনেককে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সেই দায়িত্ব গ্রহণের পর কিছু ছাত্র নেতা চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে পড়েন। এর দায় সরাসরি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের, কারণ তিনি কখনোই এসব ছাত্রনেতাদের দায়িত্ব গ্রহণের পর মূল কাজে ফেরত যেতে বলেননি। বরং, তাদের রাজনৈতিক দলে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মাথায় তুলেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “ডিসি-এসপিরা সমন্বয়কদের নাম শুনলেই হাসিমুখে ডেকে নিতেন, পাশের চেয়ারে বসাতেন, এমনকি খুশি করতে নিজের চেয়ার পর্যন্ত ছেড়ে দিতেন। এই অতিরিক্ত ভক্তি ও তেলামি ছাত্রদের ভুল পথে ঠেলে দিয়েছে। অবশ্যই আমি সব ছাত্রকে বলছি না—যারা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে, কেবল তাদের কথাই বলছি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, কিছু ছাত্র ডিসি ও এসপি অফিসে গিয়ে খবরদারি করছে। আমরা গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশে এই ধরনের আচরণ প্রত্যাশা করিনি।”

রাশেদ খান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা আশা করেছিলাম, নতুন সরকার দুর্নীতি বন্ধ করবে, উন্নয়ন শুরু করবে এবং স্বচ্ছতা আনবে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। এক বছরের মধ্যে দেশে দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি, রাস্তাঘাট উন্নত হয়নি, দুর্নীতি ও দখলদারি বন্ধ হয়নি। উপদেষ্টারা নিজেদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু তা জনসমক্ষে প্রকাশ করেননি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসলে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার নকশা বহাল রেখেই দেশ চালাচ্ছেন। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে এখনো আওয়ামী লীগ প্রভাব বিস্তার করছে।”

এ সময় তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরকে গ্রেপ্তারেরও দাবি জানান। তার বক্তব্য, “আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ। যারা ফ্যাসিবাদী শাসন ফিরিয়ে আনতে চায়, তাদের পুনর্বাসন হতে দেওয়া যাবে না।”

সভায় জেলা গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া বক্তব্য দেন জেলা সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মোহাম্মাদ ফরহাদ মিয়া, সিনিয়র সহসভাপতি মো. রুবেল শেখ, সহ-অর্থ সম্পাদক শেখ জাহিদ হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ‌হৃদয় আহমেদ, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি সাইদুর রহমান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি ‌জুয়েল ভান্ডারী প্রমুখ।

রাশেদ খানের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি তার সরাসরি অভিযোগ এবং ছাত্র রাজনীতির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার ক্ষোভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তুমুল আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এ ধরনের অভিযোগ অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

No comments found