সত্যজিৎ দাস:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর চা বাগানের সুনছড়া ফাঁড়ি এলাকা থেকে গর্জন প্রজাতির একটি বড় ও মূল্যবান গাছ চুরির ঘটনা ঘটেছে। গাছটির আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ২ লক্ষ টাকা। চুরি হয় রোববার (১৩ জুলাই) ভোরে, চা বাগানের ২২ নম্বর সেকশনের একটি টিলাভূমি থেকে।
সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাটা গাছের মূথা এখনও টিলায় পড়ে আছে। গাছটি সরাতে গিয়ে চোরচক্র আশপাশের একাধিক চা গাছও কেটে ফেলেছে। স্থানীয় শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন;এত বড় গাছ পাহারাদার বা বাগান ব্যবস্থাপকের সহযোগিতা ছাড়া চুরি করা সম্ভব নয়।
চা বাগান-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,স্থানীয় কাঠ পাচারকারী মিলন মিয়া শনিবার গভীর রাতে নিজস্ব দুইটি ট্রাক ও প্রায় ১৪-১৫ জন শ্রমিক নিয়ে চা বাগানে প্রবেশ করেন। অভিযোগ রয়েছে, বাগানের লাইন চৌকিদার ইব্রাহিম ও উসমান তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন।
দেশ রূপান্তরের কাছে পৌঁছেছে মিলন মিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক ভয়েস রেকর্ড,যা থেকে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। অভিযুক্ত মিলন মিয়া কমলগঞ্জের আলীনগর ইউনিয়নের চিৎলিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং বর্তমানে করিমপুর এলাকায় বসবাস করছেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সরকারি বন, রেলপথ ও সড়কপথের গাছ চুরির একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
বাগানের এক চা শ্রমিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,“এভাবে গাছ কেটে নেওয়ায় পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, পাশাপাশি চা উৎপাদনেও প্রভাব পড়ছে। চা গাছকে অতিবৃষ্টি ও রোদ থেকে রক্ষা করতে ছায়া গাছ প্রয়োজন, যেগুলো পরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়।”
বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক প্রবীর হাওলাদার মুঠোফোনে জানান,তিনি বর্তমানে শ্রীমঙ্গলে অবস্থান করছেন,পরে কথা বলবেন। তবে আলীনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক রফিউল আলম রানা জানান,“সাপ্তাহিক ছুটির কারণে রবিবার কিছু করা সম্ভব হয়নি। সোমবার থানায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দেওয়া হবে। বাগানের কেউ জড়িত থাকলে তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে।”
এই ঘটনায় চা বাগান প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা ও স্থানীয় চক্রের গোপন আঁতাত উঠে এসেছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।