ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে একটি অবৈধ স্থাপনা (দোকান ঘর)নিয়ে ফের বিতর্ক,আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিগত ৫ আগস্টের পর বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা দোকান ঘরটি উচ্ছেদের চেষ্টা করলেও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয়নি। তবে এবার বেআইনি ভাবে গড়ে তোলা দোকান ঘরটি অপসারণের দাবীতে জেলা প্রশাসক,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে দরখাস্ত দিয়েছে একটি পক্ষ। স্থানীয় প্রভাবশালী একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্কিত পক্ষটির অভিযোগ,আলোচিত দোকান ঘরটির প্রতিষ্ঠাতা শেখ মফিজ শিপন একজন আওয়ামী দলবাজ সাংবাদিক। আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনামলে তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বোয়ালমারী পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্রে সরকারি জায়গায় দুই কক্ষের পাকা দোকান ঘরটি গড়ে তোলেন।
বোয়ালমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার সাহা স্বাক্ষরিত দরখাস্তে আরো উল্লেখ করা হয়,উপজেলার চতুল ইউনিয়নের আরাজিবাইখীর গ্রামের বাসিন্দা শিপন আওয়ামী শাসনামলে এতটাই প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর ছিলেন যে কোন প্রকার আইন বিধির তোয়াক্কা না করে সরকারি বন্দবস্ত ছাড়াই স্থানীয় মুক্তি যোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এবং থানার মূল গেইট সংলগ্ন অতিব গুরুত্বপূর্ন প্রায় এক শতক জায়গা দখল করে স্থাপনাটি গড়ে তোলেন। স্থানীয় প্রশাসন সে সময় নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করে।
জানাযায়,উপজেলা ভূমি অফিসের মালিকানাধিন জায়গাটি সব সময় মানুষের পদ চারণায় মুখরিত থাকত। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স,শহীদ মিনার ও থানায় যাতায়াতকারীরা জায়গাটি দিয়ে হাঁটাচলা করার পাশাপাশি মটর সাইকেল সহ অন্যান্য যানবাহন পার্কিং এর কাজে ব্যবহার করত। কিন্তু বছর তিনেক আগে জায়গাটি বেদখল হওয়ায় পথচারীরা যেমন বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে তেমনি বেহাত হয়ে গেছে রাষ্ট্রের কোটি টাকার সম্পত্তি। সেই সাথে ব্যাহত হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সৌন্দর্য,নষ্ট হচ্ছে জায়গাটির পরিবেশগত ভারসাম্য। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বোয়ালমারী উপজেলা যুবদল নেতা মোঃ পিকুল মিয়া বলেন,আওয়ামী দোসরদের লুটপাটের দিন শেষ। থানার গেট এলাকার মূল্যবান জমি এখনো কেন তাদের দখলে থাকবে? একজন সাংবাদিক কর্তৃক রাষ্ট্রের কোটি টাকার সম্পদ আত্মসাত খুবই দূঃখ জনক। দ্রুত ঐ জমি দখলমুক্ত করার দাবী জানান পিকুল মিয়া।
বোয়ালমারী পৌর যুবদলের সদস্য সচিব মোঃ আলামিন হুসাইন বলেন,মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে,শহীদ মিনার,থানা ভবনের মাঝখানে এমন একটা স্থাপনা খুবই বেমানান। তাও আবার জবরদখল! ফ্যাসিস্টদের দোসর মফিজ শিপন কে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। দখল মুক্ত করতে হবে সরকারের মূল্যবান জমি। এ বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন,জমিটি ভূমি অফিসের মালাকানাধিন। কারো নামে বন্দবস্ত দেওয়া হয়নি। তবে বেশ আগে থেকে সেখানে একটি দোকান ঘর বিদ্যমান। কিভাবে সেই ঘর উঠলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী দরখাস্ত প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন,জানতে পেরেছি দোকান ঘরটির বৈধ কোন কাগজপত্র নেই।
তদন্তে যদি সেটি সঠিক প্রমাণিত হয় তবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয় যোগাযোগ করা হলে দোকান ঘরের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মফিজ শিপন মুঠোফোনে বলেন,আমার বিরুদ্ধে যা বলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা,অপপ্রচার। জবর দখল নয় বৈধ কাগজপত্রের ভিত্তিতেই দোকান ঘরটি গড়ে তোলা হয়েছে।