সম্প্রতি বিএনপি নিয়ে ফেসবুকে একটি বিতর্কিত মন্তব্য পোস্ট করেছেন হাবিবুর রহমান মিসবাহ। তার এই পোস্টে তিনি বিএনপির কার্যক্রম এবং কিছু ইসলামি ব্যক্তিত্বের সমালোচনা করে বলেন, 'বিএনপি যা করবে তা হালাল: চা টা মোল্লা'। তিনি উল্লেখ করেছেন যে বিএনপির সাথে জড়িত কিছু কর্মকাণ্ডকে কিছু মৌলভী হালাল বলে মনে করেন। মিসবাহ তার পোস্টে বিএনপির অতীত কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচনী কার্যক্রম নিয়েও সমালোচনা করেছেন।
মিসবাহর পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন যে, 'পাথর মেরে খুন, ইট দিয়ে খুন, স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে উলঙ্গ করে ভিডিও বানানো, ধর্ষণ করা, বালুতে পুতে চাঁদা আদায়, পাথর লুট, এসব জায়েয (!) কারণ বিএনপি এর সাথে জড়িত।' তার মতে, বিএনপির নেতাকর্মীরা এতে লজ্জা পেলেও কিছু মৌলভী এগুলিকে হালাল বানাতে রেডি আছে।
তিনি আরও বলেন, '১৮ এর নির্বাচনে গিয়াও কেউ দালাল না, কারণ বিএনপিও সেই নির্বাচনে গিয়েছিল তাই। বিএনপি যেহেতু গিয়েছে সেহেতু ঠিকাছে।' এই প্রসঙ্গে তিনি বিএনপির ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং সংসদে সদস্য পাঠানোর বিষয়টি উল্লেখ করেন।
মিসবাহর এই মন্তব্যে ফেসবুকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই তার এই মন্তব্যকে অত্যন্ত বিতর্কিত এবং অসত্য বলে উল্লেখ করেছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা এই পোস্ট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং মিসবাহর মন্তব্যকে রাজনৈতিক প্ররোচনা বলে উল্লেখ করেছেন।
বিএনপির একজন মুখপাত্র বলেছেন যে, 'এ ধরনের মন্তব্য বিভাজন সৃষ্টি করে এবং রাজনৈতিক স্থিরতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।' তিনি আরও বলেন যে, 'বিএনপি সবসময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী এবং এ ধরনের মন্তব্য আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিপন্থী।'
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, এ ধরনের মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে, রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত এবং এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত যা সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে।
এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন কোনো বিষয় নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে অনেক সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয় যা সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে। ভবিষ্যতে এধরনের বিভ্রান্তি যাতে না ঘটে সেজন্য রাজনৈতিক নেতাদের আরও সচেতন এবং দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন।
সামাজিক মাধ্যমের বিশ্লেষকরা বলছেন যে, এ ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষতি করতে পারে এবং এটি সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে না। তারা আরও যোগ করেন যে, এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত হবে সংবেদনশীলতার সাথে বিষয়গুলি মোকাবিলা করা এবং জনমনে বিভ্রান্তি যাতে না ছড়ায় সে বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
পরিশেষে বলা যায়, রাজনৈতিক নেতাদের এবং সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের উচিত হবে সমাজে বিভাজন সৃষ্টি না করে সঠিক তথ্য প্রচার করা এবং সমাজের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করা।