বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া ও উত্তাল নদ-নদীর কারণে ভোলার ১০টি অভ্যন্তরীণ নৌপথে লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে। এর ফলে ভোলা ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যার কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে গত কয়েকদিন ধরেই ভোলায় থেমে থেমে বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে উঠেছে এবং নদীর পানি বিপদসীমার ১৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার সাত উপজেলার অর্ধশতাধিক চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর, ভেলুমিয়া, ভেদুরিয়া, কাচিয়া, দৌলতখান উপজেলার মদনপুর, মেদুয়া, ভবানীপুর, তজুমদ্দিনের মলংচরা ও সোনাপুর, মনপুরার কলাতলী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল এখন পানির নিচে।
বিআইডব্লিউটিএ ভোলা নদী বন্দরের ট্রাফিক কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনা এড়াতে ভোলা-লক্ষ্মীপুর, দৌলতখান-আলেকজান্ডার, হাতিয়া-মনপুরাসহ মোট ১০টি রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়াও ইলিশা ফেরিঘাটের দুটি গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে, যা যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি করছে। ইলিশা ফেরিঘাটে হাই গ্যাংওয়েতে হাঁটুসমান এবং লো গ্যাংওয়েতে কোমর সমান পানি ওঠানামা করছে।
লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াতকারী যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকেই গন্তব্যে যেতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনেও ব্যাঘাত ঘটছে। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভোলা আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।