ভোলার দৌলতখানে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ভোলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের মূল কারণ ছিল শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকালে দৌলতখান উপজেলায় ঘটে যাওয়া একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। মৎস্য বিভাগের ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণে অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সময় টিভি ও সমকাল পত্রিকার ভোলার স্টাফ রিপোর্টার নাসির উদ্দিন লিটন এবং ক্যামেরা পার্সন উৎপল দেবনাথের উপর হামলা হয়। এতে তাদের ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয় এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
ঘটনার পর স্থানীয়দের সহায়তায় আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়। তবে হামলাকারীরা থানায় গিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে বলে অভিযোগ উঠে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বক্তারা দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ভোলার সিনিয়র সাংবাদিক ও দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক মোঃ শওকাত হোসেন, ইনডিপেনডেন্ট টিভির প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট নজরুল হক অনু, কালবেলা প্রতিনিধি ওমর ফারুক, বাসস প্রতিনিধি আল আমিন শাহরিয়ার, সময় টিভি স্টাফ রিপোর্টার নাসির উদ্দিন লিটন, চ্যানেল আই প্রতিনিধি হারুন অর রশিদ, আমার দেশ প্রতিনিধি ইউনুছ শরীফ এবং একুশে টিভি প্রতিনিধি মেসবাহ উদ্দিন শিপু প্রমুখ।
এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক সমাজের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে, এবং তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। বক্তারা বলেন, সন্ত্রাসীরা কোনো দলের হতে পারে না এবং তারা সাংবাদিকদের উপর হামলা করে সাংবাদিকতা ও গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হানছে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তারা আশা প্রকাশ করেন, প্রশাসন দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে এবং দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করবে।
এই ধরনের হামলা শুধুমাত্র সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করে না, বরং সমাজের সুষ্ঠু তথ্যপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটায়। তাই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে তারা মনে করেন।
ভোলার এই ঘটনা সাংবাদিকদের পেশাগত জীবনের ঝুঁকি ও নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবনার উদ্রেক করেছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।