নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ে মা-বাবার শাসনের পর আত্মহত্যা করেছে ফারিহা তাছনিম নামের এক কিশোরী। জানা যায়, ফারিহা তাছনিম স্থানীয় মল্লিকপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বুধবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
ফারিহা তাছনিমের বাবা সহিদুল ইসলাম বিদেশে কর্মরত, এবং মা শম্পা বেগম ঘরে থেকে মেয়েকে দেখাশোনা করতেন। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে ফারিহাকে বকাঝকা করেছিলেন তার মা। বাবা ফোনে একই নির্দেশনা দিয়ে মেয়েকে পরামর্শ দেন মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার না করার জন্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ফারিহা তার বন্ধুদের সাথে খেলছিল। হঠাৎ তার পেটে যন্ত্রণা শুরু হলে সে জানায় যে, আলুর বস্তায় রাখা গ্যাসবড়ি খেয়েছে। পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাজশাহী নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মেয়ের এ মর্মান্তিক ঘটনার পর তার মা মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, বর্তমান সমাজে কিশোর-কিশোরীরা কীভাবে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হচ্ছে এবং পিতামাতার শাসন মানছে না, এটি একটি বড় সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনিছুর রহমান নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। তবে পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
মল্লিকপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মাসুদ আলম বলেন, 'ফারিহা তাছনিম ক্লাসের মধ্যে খুব ভালো ছাত্রী ছিল এবং তার রোল ছিল ৯। তার এ রকম একটি ভুল সিদ্ধান্ত আমি মানতে পারছি না।'
এই ঘটনা মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং কিশোর-কিশোরীদের মানসিক চাপ সম্পর্কে আমাদেরকে আরো সচেতন হওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করায়। পরিবারের অভিভাবকদের উচিত সন্তানের প্রতি আরো মনোযোগী হওয়া এবং প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।