close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

বাংলাদেশ-চীন-আফগানিস্তানকে নিয়ে জোট গড়তে চায় পাকিস্তান

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীর বিস্ফোরক ঘোষণা—বাংলাদেশ, চীন ও আফগানিস্তানকে নিয়ে শক্তিশালী জোট গঠনের পরিকল্পনা। ভারতের সঙ্গে আকাশযুদ্ধ, কূটনৈতিক উত্তেজনা ও জোট রাজনীতির নাটকীয় মোড়!..

বাংলাদেশ-চীন-আফগানিস্তানকে নিয়ে শক্তিশালী জোট গড়ার ঘোষণা পাকিস্তানের, ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা অবস্থান নেওয়ার বার্তা

পাকিস্তান এবার আন্তর্জাতিক কৌশলগত মঞ্চে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এক বিস্ময়কর ঘোষণায় জানিয়েছেন, বাংলাদেশ, চীন ও আফগানিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে একটি নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনে আগ্রহী পাকিস্তান। এই পরিকল্পনা এশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) 'অল পাকিস্তান চেম্বার্স প্রেসিডেন্টস' সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে এই ঘোষণা দেন ইসহাক দার। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ, চীন ও আফগানিস্তানের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার এটি উপযুক্ত সময়। এই তিন দেশের সঙ্গে জোট গঠনে পাকিস্তানের অবশ্যই এগিয়ে যাওয়া উচিত।”

ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার নতুন অধ্যায়: এক ঘণ্টার আকাশযুদ্ধের দাবি

এ সম্মেলনে শুধু জোট গঠনের কথাই নয়, সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে উত্তেজনারও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে আকাশে ন্যায়বিচারের লড়াই প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। এর আগে এই ধরনের লড়াইয়ের সময়কাল ছিল ৩০ মিনিট। এটি একটি নতুন রেকর্ড। এটা আমাদের সামরিক সক্ষমতার প্রমাণ।”

তিনি আরও দাবি করেন, “বিশ্বজুড়ে পাকিস্তানকে একটি দুর্বল দেশ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা হয়েছে দীর্ঘদিন। কিন্তু বাস্তবতা বদলাচ্ছে। বিশ্ব এখন পাকিস্তানকে শক্তিশালী দেশ হিসেবে দেখতে শুরু করেছে।”

পেহেলগাম হামলা, পানি চুক্তি ও আকাশসীমা বন্ধ—পাকিস্তানের অভিযোগের ফিরিস্তি

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, “ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই পেহেলগামে হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দেয় এবং একতরফাভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। এমনকি সিন্ধু পানি চুক্তিও স্থগিত করে নিজেদের কর্তৃত্ব দেখাতে চায় ভারত। জবাবে পাকিস্তানও নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।”

তিনি জানান, “আমরা কখনো সংঘাত শুরু করতে চাই না। কিন্তু এইবার ভারতের আচরণ এতটাই সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল যে, পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে মিসাইল হামলা চালায়। যখন পাকিস্তানের শহরগুলো লক্ষ্য করে মিসাইল ছোড়া শুরু হয়, তখন আমাদের ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে।”

নুর খান বিমানঘাঁটিতে হামলার জবাব, যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত ও আন্তর্জাতিক সংলাপ

ইসহাক দার বলেন, “নুর খান বিমানঘাঁটিতে হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের আর চুপ করে থাকার সুযোগ ছিল না। আমরা যেসব দেশ থেকে শান্ত থাকার আহ্বান পেয়েছি, তাদের সম্মান রেখেও আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “১১ মে সকালে আমাকে জানানো হয় যে ভারত যুদ্ধবিরতির আগ্রহ প্রকাশ করেছে।”

এই উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী আরও জানান, তিনি সম্প্রতি আফগানিস্তান ও চীনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকগুলো ভবিষ্যতের আঞ্চলিক জোট গঠনের অংশ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।


জোট গঠন পরিকল্পনার তাৎপর্য কী?

বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের এই উদ্যোগ দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভারসাম্যে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে। বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক অবস্থান, চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি এবং আফগানিস্তানের কৌশলগত গুরুত্ব—এই তিনের সমন্বয়ে পাকিস্তানের নেতৃত্বে একটি নতুন বলয় তৈরি হলে তা ভারতের জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বাংলাদেশ কী করবে?

যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে এই প্রস্তাব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশ কী এই প্রস্তাবিত জোটে আগ্রহ দেখাবে, নাকি নিরপেক্ষ অবস্থান নেবে—তা এখন দেখার বিষয়।

Ingen kommentarer fundet