close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

৭-১ ; ব্রাজিলের মারাকানার দুঃস্বপ্নের রাতের আজ ১১ বছর

Mehedi Hasan avatar   
Mehedi Hasan
৮ জুলাই, ২০১৪। বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর দিনগুলোর একটি। ব্রাজিলের ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়াম সেদিন প্রস্তুত ছিল এক রূপকথার অপেক্ষায়—স্বাগতিক ব্রাজিলের ফাইনালে ওঠার গল্প..

কিন্তু রাত শেষে সেটিই হয়ে ওঠে এক দুঃস্বপ্নের নাম। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিজেদের মাটিতে জার্মানির কাছে বিধ্বস্ত হয়েছিল সেলেসাওরা, স্কোরলাইন ৭-১।

ম্যাচ শুরুর আগে উত্তেজনায় কাঁপছিল গোটা ব্রাজিল। সবাই বিশ্বাস করছিল, নেইমারবিহীন দলটিও জার্মানদের হারিয়ে দেবে। কিন্তু খেলা শুরু হতে না হতেই ঘটে ভিন্ন কিছু।

খেলার মাত্র ১১ মিনিটে টমাস মুলারের গোলে জার্মানি এগিয়ে যায়। সেটিই ছিল শুরু। এরপর যেনো ঝড় উঠে মারাকানায়—একটি, দুটি নয়, মাত্র ১৮ মিনিটের মধ্যে ৪ গোল! ২৩ মিনিটে মিরোস্লাভ ক্লোসার গোল দিয়ে ইতিহাস গড়েন—বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তখনই ক্যামেরায় ধরা পড়ে গ্যালারির এক ব্রাজিল সমর্থক তরুণীর কান্না। সেই কান্না যেন ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশজুড়ে।

এরপর গোল করে যান ক্রুস (২টি), সামি খেদিরা এবং শেষদিকে আন্দ্রে শুরলে। বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকে টনি ক্রুসের দ্বিতীয় গোলটি—২৬ মিনিটে দুর্দান্ত টিমওয়ার্কের এক নিদর্শন। সামি খেদিরা নিজের জন্য সুযোগ থাকলেও নিঃস্বার্থভাবে বল বাড়ান ক্রুসকে, যিনি ভুল করেননি।

প্রথমার্ধেই স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-০। ফুটবল ইতিহাসে কোনো বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের প্রথমার্ধে এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।

দ্বিতীয়ার্ধে জার্মানিরা খানিকটা ধীর। ম্যাচ শেষে ডিফেন্ডার ম্যাটস হামেলস বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম খেলাটা শেষ করতে। প্রতিপক্ষকে অসম্মান করা আমাদের লক্ষ্য ছিল না। আমরা শুধু মনোযোগ ধরে রাখতে চেয়েছি।”

শেষ বাঁশি বাজে, স্কোরবোর্ড: জার্মানি ৭ – ১ ব্রাজিল। সান্ত্বনার একমাত্র গোলটি আসে অস্কার এর পা থেকে, ৯০ মিনিটে। কিন্তু সেটি কিছুতেই লজ্জা ঢাকতে পারেনি। হাজারো সমর্থকের চোখের জল, স্তব্ধ মারাকানা, অবিশ্বাসে কাঁপা একটি জাতি—সবকিছু মিলিয়ে সেটিই ছিল ব্রাজিল ফুটবলের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ রাত।

সেই রাত শুধু একটি দলের হার নয়, ছিল সম্মান, আত্মবিশ্বাস আর ইতিহাসের বিপর্যয়। ‘ফুটবল ঈশ্বরের দেশে’ এমন হার কে কল্পনা করেছিল?

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি