
Seneste videoer
সিলেটের বালাগঞ্জ হাওর বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান। এই হাওরটি তার বৈচিত্র্যময় পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক রূপের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। বালাগঞ্জ হাওর সিলেট বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, উদ্ভিদ এবং জলজ প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্যই নয়, বরং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছেও বিশেষ আকর্ষণীয়।
বালাগঞ্জ হাওর সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই হাওরের চারপাশে বিস্তৃত সবুজ প্রান্তর এবং পানির আধার রয়েছে যা প্রকৃতির অনন্য রূপ প্রকাশ করে। বর্ষাকালে হাওরটি জলমগ্ন হয়ে একটি বিশাল জলাশয়ে পরিণত হয়, যেখানে নৌকা ভ্রমণ করে স্থানীয় এবং পর্যটকরা প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করেন। শীতকালে হাওরটি তার রূপ পরিবর্তন করে এবং বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখির আগমনে মুখরিত থাকে।
স্থানীয় কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, "বালাগঞ্জ হাওর আমাদের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম উৎস। এখানে মাছ চাষ এবং কৃষিকাজের মাধ্যমে আমরা জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু একইসঙ্গে আমরা এই হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা করতে সচেষ্ট।"
একজন পর্যটক, মেহেদী হাসান, জানান, "আমি প্রথমবারের মতো বালাগঞ্জ হাওরে এসেছি এবং এর নৈসর্গিক সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। বিশেষ করে পাখিদের কলরব এবং সবুজের সমারোহ সত্যিই মনোমুগ্ধকর।"
বালাগঞ্জ হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশবিদদের মতে, এই হাওরটি শুধু পর্যটনের জন্য নয়, বরং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন হাওরের সংরক্ষণ এবং উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্থানীয় প্রশাসন পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এছাড়া, স্থানীয় প্রশাসন হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা এবং স্থানীয় জনগণের জীবিকা উন্নয়নে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বালাগঞ্জ হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য স্থানীয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। এর ওপর নির্ভর করে স্থানীয় লোকজ সংগীত, নৃত্য এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই হাওরের বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক পরিবেশ স্থানীয় সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে।
বালাগঞ্জ হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণ সহ সবার অংশগ্রহণ জরুরি। পর্যটন শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। তবে, পর্যটন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিও সমানভাবে গুরুত্ব পাওয়া উচিত। যথাযথ পরিকল্পনা এবং সংরক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে বালাগঞ্জ হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে।
মিরাপাড়া হাটটি সিলেট শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। হাটের বিপুল আকার এবং সুসংগঠিত ব্যবস্থাপনা ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য একটি সুবিধাজনক স্থান হিসেবে পরিচিত। প্রতিটি হাটের দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে কেনাবেচা চলে। ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে ভোরে হাটে উপস্থিত হন, এবং ক্রেতারাও সকাল থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করেন।
হাটের এক ব্যবসায়ী, রহিম উদ্দিন, বলেন, "এই হাটে বেচাকেনা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে উৎসবের সময় ক্রেতাদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো।" অন্যদিকে, এক ক্রেতা জানান, "আমরা এখানে আসি কারণ এখানে গরু ও ছাগলের মান ভালো এবং দামও সাশ্রয়ী।"
সরকারের পক্ষ থেকে হাটের কার্যক্রম পরিচালনা এবং সংরক্ষণে বিশেষ নজর দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন হাটের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া, পশু বেচাকেনার ক্ষেত্রে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সিলেটের মিরাপাড়া গরু-ছাগলের হাট শুধু একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র নয়, এটি একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক মেলবন্ধনের ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে এটি আরও উন্নত হতে পারে।
রাজধানীর গাবতলী পশু হাটে সাত লাখ টাকার একটি গরুর আকস্মিক মৃত্যু ঘটেছে। এই ঘটনা ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং পশুর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
হাট কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে গাবতলী হাটে এক বিশাল আকৃতির গরু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়। গরুটির মালিক রাজশাহীর এক খামারি, যিনি গরুটি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে হাটে এনেছিলেন।
মালিকের বক্তব্য অনুযায়ী, গরুটি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল এবং তার প্রয়োজনীয় সব টিকা ও চিকিৎসা করানো হয়েছিল। তিনি বলেন, "গরুটির অস্বাভাবিক আচরণ দেখে আমরা সঙ্গে সঙ্গে হাটের পশু চিকিৎসকদের খবর দিই, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।"
হাটের পশু চিকিৎসক ডা. মিজানুর রহমান জানান, "প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গরুটি খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে মারা গেছে। তবে সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হবে।" ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্য বিক্রেতারা এই ঘটনার জন্য হাট ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন। তাঁদের অভিযোগ, হাটে পশুর জন্য যথাযথ স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা নেই।
এই ঘটনা পশু ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। অনেক ক্রেতা বিক্রেতারা তাদের গরুর স্বাস্থ্য নিয়ে শঙ্কিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে হাট কর্তৃপক্ষের উচিত পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা জোরদার করা এবং খাদ্য ও পানীয়ের মান নিয়ন্ত্রণ করা।
পশু পালন বিশেষজ্ঞ ড. শাহিন আলম বলেন, "পশু হাটে প্রচুর পশু একত্রে রাখা হয়, যা রোগ বিস্তারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। হাট কর্তৃপক্ষের উচিত পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আরো বেশি নজর দেয়া।"
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে হাট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে এর পুনরাবৃত্তি এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে।
জামালপুর শহরের বটতলা এলাকায় অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে বারণ করার জেরে মার্জিয়া আরিফ মুনিয়া তামান্না (১১) নামের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। তামান্না সদর উপজেলার বাঁশচড়া এলাকার আরিফ হোসেনের (৩৭) মেয়ে।
রোববার (১ জুন) সকালের দিকে ঘটনাস্থল থেকে ওই কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে মোবাইল ব্যবহারে নিষেধ করাতেই এই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে আরিফ হোসেন জানান, তার মেয়ে মার্জিয়া শহরের উইজডম ল্যাব. স্কুল এন্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। শহরের স্কুলে মেয়েকে ভর্তি করিয়ে তামান্নার বাবা স্কুলের কাছেই ১মাস আগে বাসা ভাড়া নেন। শনিবার ২টার দিকে তিনি ঘুম থেকে উঠে দেখেন তামান্না তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। তখন অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করেন। পরে সে তার বাবার কথা না মানলে একপর্যায়ে দুটি থাপ্পড় দিয়ে তামান্নার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নেন তার বাবা। পরের দিন রবিবার সকাল হলেও তামান্না দরজা না খোলায় ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙ্গে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুঁলে আছে তামান্না।
জামালপুর পিবিআই পরিদর্শক সামিউল ইসলাম সানী বলেন, নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে,মোবাইল ব্যবহার করতে নিষেধ করায় আত্মহত্যা করেছে এ কিশোরী। নিহতের মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কোরবানির ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে দেশের বিভিন্ন স্থানের পশুর হাটগুলো। এমনই একটি হাট বসেছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া তেওরিহাট হাইস্কুল মাঠে।"
গত কয়েকদিন ধরেই সিলেট অঞ্চলে বন্যার পূর্বাভাস দিয়ে যাচ্ছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির কারণে বরাবরই সিলেট অঞ্চল ভেসে যায়।
এবারও তাই হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটজুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরছিল। তবে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তার পরিমাণ ছিল প্রায় ২২৯ মিলিমিটার। শুক্রবার রাত আর শনিবার মিলে এ অঞ্চলে চলীছল তুমুল বৃষ্টিপাত, যাকে বলে মুষলধারে বৃষ্টি।
এদিকে আবার ক্ষনে ক্ষনে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে সুরমা কুশিয়ারার পানি। শুক্রবার বিকেলেও বিপৎসীমার কয়েক ফুট নিচে থাকলেও রাতেই তা আশঙ্কাজনক পর্যায়ের দিকে যেতে থাকে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে মোট ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আসাম আর মেঘালয়ে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে যেকোনো সময়ে বন্যায় ভাসতে পারে সিলেট অঞ্চল। আর আবহাওয়া অফিস কয়েকদিন আগেই এ অঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার সতর্কতা জারি করে রেখেছে।
মোবাইল চুরি'র ঘটনাকে কেন্দ্র করে আশুগঞ্জের খড়িয়ালা দুই চাতাল কলের শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ।