Redowan Hasan Khalid
Redowan Hasan Khalid

Redowan Hasan Khalid

      |      

Les abonnés

   Dernières vidéos

Redowan Hasan Khalid
23 Vues · 6 mois depuis

হুজুরদের খুশি করতে বিদেশে চামড়া রপ্তানি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা এম. এ. রশিদ ভূঁইয়া।

সোমবার (২ জুন) সাভার চামড়া শিল্প নগরীর বিএফএলএলএফইএ ভবনের হলরুমে কাঁচা ও ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির সরকারি আদেশ বাতিলের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সরকার কাঁচা চামড়া বাহিরের দেশে রপ্তানীর সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ জানতে প্রশ্ন করলে রশিদ ভূঁইয়া বলেন, “সরকার ঈদের ছুটি ১০ দিন করেছে মানুষের মন রক্ষা করতে। হুজুরদের এবং মাদ্রাসার লোকজনকে খুশি করার জন্য সরকার নিজ ইচ্ছায় বাহিরের দেশে চামড়া রপ্তানি করছে। আমরা স্পষ্ট নিষেধ করে বলেছি, এটা করা ঠিক হবে না। আগে চামড়াটা রক্ষা করুন, কাঁচা চামড়া দেশের বাইরে রপ্তানি করা যাবে না। এতে অনেক খরচেয় বিষয় আছে। এছাড়া আমাদের এখানে রপ্তানির কোনো সুযোগ নেই।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “সরকার কিভাবে কার সাথে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। এই সিদ্ধান্তটা আত্মঘাতী হয়েছে। রাস্তায় হাজার হাজার লোক আজ মানববন্ধন করতে এসেছে, তারা এইখানের শ্রমিক। এরা কি করে চলবে? এখানে প্রত্যেকটা লোক চামড়া শিল্পের সাথে যুক্ত।”

চামড়ার দাম কমার পেছনের সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখন সিন্ডিকেট বলতে কিছু নেই। আমরা ট্যানারি মালিকরা কোনোভাবেই এর সাথে যুক্ত না। যখন চামড়ার দাম ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা ছিল, তখন এগুলো হতো। এখন সারা বিশ্বে চামড়ার দাম কমে গেছে। এছাড়া তিন-চারটা হাত ঘুরে কাঁচা চামড়া আমাদের কাছে আসে।”

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, “আমরা কোরবানির মৌসুমে প্রায় ৬০% কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে থাকি। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ব্যতিক্রম। বাংলাদেশ থেকে কখনোই কাঁচা চামড়া রপ্তানি হয় না। ১৯৯০ সালে ওয়েট-ব্লু চামড়া রপ্তানি হয়েছিল, কিন্তু পরে তা নিষিদ্ধ করা হয়। এবারে কাঁচা চামড়া রপ্তানির বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করা সম্ভব নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের শিল্পখাতের অবস্থা বর্তমানে খুবই খারাপ। এর মধ্যে যদি কাঁচা চামড়া বিদেশে রপ্তানি করা হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়বে। কাঁচামাল যদি দেশ থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে হাজারো শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। আমাদের অনেক ব্যাংকঋণ রয়েছে, যেটা পরিশোধ করতে কঠিন পরিস্থিতি ফেস করতে হবে।”

চামড়া শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে ঐতিহ্যবাহী ও ব্যাপক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্প বর্তমানে মারাত্মক সংকটে রয়েছে। প্রায় ৮৫ বছরের পুরনো এই শিল্প খাতটি দেশীয় কাঁচামাল নির্ভর, ৮০ শতাংশ মূল্য সংযোজনকারী এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় দুই কোটির বেশি মানুষের জীবিকায় জড়িত যাদের অধিকাংশই গ্রাম থেকে এখানে এসে কাজ করছে।

বক্তব্যে তারা জানান, শিল্প উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক ও সুপারিশ পত্র প্রদান সত্ত্বেও কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি। এমনকি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটিও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী উদ্যোগ নিতে পারেনি । তবে তারা ২৫ মে কাঁচা চামড়া ও ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যা ট্যানারি মালিকদের জন্য ‘আত্মঘাতি’।

নেতৃবৃন্দরা বলেন, ওয়েট ব্লু রপ্তানি করলে ট্যানারি নগরীতে ফিনিশড ও ক্রাস্ট চামড়া উৎপাদনের লক্ষ্যে যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে, তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেই সঙ্গে পরিবেশ দূষণ, উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়া, যন্ত্রপাতি ও কেমিক্যাল আমদানিতে সমস্যাসহ পুরো খাতের ওপর প্রভাব পড়বে। যার ফলে রপ্তানি আয় ৩০–৪০ শতাংশ হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ট্যানারি খাতকে রক্ষা, বৈদেশিক মুদ্রা আয় অব্যাহত রাখা, শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা এবং পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাঁচা চামড়া ও ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির অনুমতি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে ট্যানারি মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।