শ্রীলঙ্কা উপকূলে ভয়াবহ তাণ্ডব চালানোর পর ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’ এখন আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে দেশের চারটি প্রধান সমুদ্র বন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে নির্দেশ দিয়েছে। বঙ্গোপসাগরে এই ঘূর্ণিঝড়ের উপস্থিতির কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৯ নভেম্বর (শনিবার) সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৮৮০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ১৮৩০ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ১৭৫০ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৭৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়টি তার বর্তমান অবস্থানে আরও শক্তিশালী হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’-এর কেন্দ্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী সমুদ্র এলাকা অত্যন্ত উত্তাল রয়েছে।
এর আগে শ্রীলঙ্কায় এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। দেশটির আবহাওয়া দপ্তর জানায়, ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে কোনো কোনো এলাকায় ৩০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়াহ’-এর তাণ্ডবে শ্রীলঙ্কায় ১২৩ জনের মৃত্যু এবং অন্তত ১৩০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সাগরে বিচরণ না করে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছে। সম্ভাব্য যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপকূলীয় প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকার জন্য বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ ও তীব্রতা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে আবহাওয়া দপ্তর।



















