ঝিনাইদহের শৈলকূপার শিকলবন্দী প্রতিবন্ধী নাজমিনের পরিবারকে আর্থিক ও মানবিক সহায়তা দিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন তারেক রহমান। ১৮ বছর বয়সী নাজমিন ১৩ বছর ধরে শিকলে বন্দী হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তারেক রহমানের নির্দেশে “আমরা বিএনপি পরিবার”现场 নাজমিনের পরিবারের পাশে দাঁড়ায়।
ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার আনন্দনগর গ্রামে ১৮ বছর বয়সী শারীরিক প্রতিবন্ধী নাজমিন খাতুনের অসহায় জীবন বহু বছর ধরেই স্থানীয় মানুষের মনকে নাড়া দিয়ে এসেছে। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে পড়া নাজমিন ধীরে ধীরে চরম মানসিক ও শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হন। পরিবারে আর্থিক অভাব, চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের অক্ষমতা এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে তাকে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বাড়ির একটি নির্দিষ্ট ঘরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
এই নির্মম বাস্তবতা দেশের বিভিন্ন জায়গায় আলোচনায় এলে বিএনপি চেয়ারপারসন তারেক রহমান বিষয়টি জানতে পারেন। মানবিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি অবিলম্বে শৈলকূপায় “আমরা বিএনপি পরিবার”কে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে নাজমিনের পরিবারকে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়।
সকাল ১১টার দিকে নাজমিনের বাড়িতে গিয়ে সহায়তা প্রদানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন “আমরা বিএনপি পরিবার”-এর উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত। তিনি বলেন,
“তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা সবসময় মানবিক কাজকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। নাজমিনের মতো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন “আমরা বিএনপি পরিবার”-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদসহ সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
অতিথিরা প্রথমে নাজমিনের বাড়িতে গিয়ে তার এবং তার পরিবারের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা না পাওয়ায় নাজমিনের পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে, তা দেখে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ বলেন—
এ পরিবারকে নিয়মিত সহায়তার আওতায় আনতে হবে, এবং প্রয়োজন হলে দ্রুত বিশেষায়িত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
পরিবারের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত করুণ। দিনমজুর নাছির মন্ডল এবং তার স্ত্রী বুলবুলি বেগম দুই প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে চরম দুঃস্বপ্নের মতো দিন কাটাচ্ছেন। নাজমিনের ভাই জোবায়েরও মানসিক প্রতিবন্ধী। সংসারের হাল ধরার মতো কেউ নেই। একদিকে দৈনন্দিন খরচ, অন্যদিকে দুই সন্তানের চিকিৎসা—সব মিলিয়ে পরিবারটি ভেঙে পড়ার উপক্রম।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা ঘোষণা করেন যে, শুধু আজকের সহায়তা নয়—আগামীদিনেও নাজমিনের চিকিৎসা ও পরিবারের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী তারা পাশে দাঁড়াবেন।
প্রধান অতিথি বলেন—
“তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে একটি মানবিক রাষ্ট্র। যেখানে নাজমিনের মতো কেউ অবহেলিত থাকবে না।”
এই মানবিক পদক্ষেপ স্থানীয় মানুষের মাঝে ব্যাপক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য করছেন—
“রাজনীতি অনেক দেখেছি, কিন্তু মানুষের পাশে দাঁড়ানোই সত্যিকারের মানবতা। এই উদ্যোগ সারা দেশের উদাহরণ হওয়া উচিত।”
নাজমিনের পরিবারও আশাবাদী—এই সহায়তা তাদের জীবনে নতুন পরিবর্তন আনবে, এবং হয়তো একদিন চিকিৎসার মাধ্যমে নাজমিনও আবার মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।



















