জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে রাজশাহীতে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার ঘটনাটি দলটির অভ্যন্তরে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। তবে এই উত্তেজনার পারদ নামিয়ে এনেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী জেলা কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও এনসিপির জেলা সমন্বয় কমিটির সাবেক সদস্য মোতালেব হোসেন। অবাঞ্ছিত ঘোষণার ঠিক একদিন পর, শনিবার (৬ ডিসেম্বর) তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
মোতালেব হোসেন তার পোস্টে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি অনিচ্ছাকৃতভাবে সারজিস আলমকে জড়িয়ে ফেলেছেন। তার মূল ক্ষোভ ছিল এনসিপির রাজশাহী জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম এবং তাকে পদ দেওয়া বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমনের বিরুদ্ধে। মোতালেব হোসেন সাইফুল ইসলামকে ‘সন্ত্রাসী রুবেলের সহযোগী’ এবং ‘আওয়ামী দোসর’ হিসেবে আখ্যা দেন। কিন্তু এই দুই নেতার কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতে গিয়েই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে তিনি উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে জড়িয়ে ফেলেন, যার জন্য তিনি অনুতপ্ত।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে মোতালেব হোসেন তার স্ট্যাটাসে সরাসরি সারজিস আলমের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে অভিযোগ করেছিলেন যে, বারবার অবগত করার পরও সারজিস আলম কোনো ভ্রুক্ষেপ করেননি। এর ভিত্তিতেই তিনি সিদ্ধান্ত টেনেছিলেন যে সারজিস আলমও এই দালালির সঙ্গে জড়িত। সেই ক্ষোভ থেকেই রাজশাহীর মাটি থেকে সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়েছিল।
তবে এই ঘটনাটি এনসিপিতে চলমান গভীর দ্বন্দ্বের প্রতিফলন। ২৯ নভেম্বর কেন্দ্র থেকে সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে রাজশাহী জেলার কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দলের একাংশ ক্ষুব্ধ। তারা সাইফুল ইসলামকে ‘আওয়ামী দোসর’ আখ্যা দিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন, যার ফলস্বরূপ একই কমিটির পাঁচজন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। এই পদত্যাগের চাপের মধ্যেই মোতালেব হোসেনের এই ইউ-টার্ন এবং দুঃখ প্রকাশ রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এ বিষয়ে মোতালেব হোসেনের বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।



















