সাবেক মন্ত্রীর পরিত্যক্ত বাড়িতে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ: গ্রেপ্তার ৫, এলাকায় চাঞ্চল্য..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কুমিল্লার লাকসামে এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর পরিত্যক্ত বাড়িতে ঘটে যাওয়া এই বর্বরোচিত ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৭ মার্চ) ..

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীর সোনাপুর এলাকার এক তরুণী ও তার স্বামী ১৩ মার্চ লাকসামে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। ১৪ মার্চ ভোরে লাকসাম বাইপাস মোড় থেকে বাড়ি ফেরার জন্য একটি সিএনজিতে ওঠেন তারা। কিন্তু চালক মো. মাসুদ সন্দেহ প্রকাশ করে তাদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এরপর কৌশলে তাদের গন্তব্যের পরিবর্তে লাকসামের গন্ডামারা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে অভিযুক্তরা তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে এবং পরিকল্পিতভাবে লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে গিয়ে স্বামীকে ফেলে রেখে ওই গৃহবধূকে অপহরণ করে।

পরিত্যক্ত বাড়িতে বিভীষিকাময় রাত

পুলিশ জানায়, পরে ভিকটিমকে লাকসামের বড়তুফা এলাকায় সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অভিযুক্ত মো. মাসুদ ও মোহাম্মদ আলী তাকে নির্মমভাবে ধর্ষণ করে। এরপর ভিকটিমকে লাকসাম পৌর শহরের তালুকদার ভিলায় অভিযুক্ত বিলকিছ আক্তার কল্পনার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে আরও একাধিকবার নির্যাতন করা হয়।

স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার, মামলা দায়ের

স্থানীয়দের সহায়তায় পরদিন ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। পরে তার মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লাকসাম থানায় মামলা করেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন:

 মোহাম্মদ আলী (২৫) – লাকসামের মনোহরপুর এলাকার বাসিন্দা
 মো. মাসুদ (২৩) – পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার বাসিন্দা
 মনির হোসেন হৃদয় (২৩) – বাতাখালী এলাকার বাসিন্দা
 আল আমিন (২৩) – উত্তর বিনই এলাকার বাসিন্দা
 বিলকিছ আক্তার কল্পনা (৪০) – মধ্য লাকসাম এলাকার বাসিন্দা

পুলিশের তৎপরতা ও আইনি পদক্ষেপ

লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।

পরিত্যক্ত বাড়ির অন্ধকার অধ্যায়

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট বিক্ষুব্ধ জনতা ওই বাড়িতে হামলা চালানোর পর থেকে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু এই পরিত্যক্ত বাড়িকে ব্যবহার করে এমন ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হওয়ায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত।

 সমাজের জন্য প্রশ্ন: নিরাপত্তা কোথায়?

এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে—পরিত্যক্ত ভবনগুলো অপরাধীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হচ্ছে কেন? প্রশাসন কি আরও কঠোর হতে পারত না? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। তবে সাধারণ মানুষের চাওয়া, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয়।

Комментариев нет


News Card Generator