close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

নোবেলের মেয়েটিকে ৭ মাস আটকে রাখার তথ্য ভিত্তিহীন!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকায় তরুণীর করা ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার জনপ্রিয় গায়ক নোবেল। অভিযোগ, তিনি মেয়েটিকে সাত মাস আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। তবে সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে উল্টো চিত্র—নোবেলের স্ত্রী বলছেন, সব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও প্রযুক..

নোবেলকে ঘিরে নতুন বিতর্ক: ধর্ষণ, অপহরণ না কি পারস্পরিক সম্পর্কের ভাঙন?

জনপ্রিয় ও বিতর্কিত গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেল আবারও সংবাদ শিরোনামে। এবার তার বিরুদ্ধে উঠেছে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগ। ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার এক তরুণী এ অভিযোগে ডেমরা থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তা আমলে নিয়ে নোবেলকে গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, “নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ একাধিক মামলা রয়েছে।”


ঘটনার শুরু ২০১৮ সালে, অভিযোগের কেন্দ্রে ব্যক্তিগত সম্পর্ক

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালে নোবেলের সঙ্গে ওই তরুণীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয়। তখন তিনি ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী ছিলেন। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথোপকথনের পর এক সময় দুজনের মধ্যে সরাসরি সাক্ষাৎ হয়। পরে নোবেল তাকে নিজের স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ডেমরা থানার অন্তর্গত বাসায় নিয়ে যান। সেখানেই নাকি শুরু হয় ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।

অভিযোগ অনুযায়ী, তরুণী বাসা থেকে ফিরতে চাইলে নোবেল আরও ২-৩ জন সহযোগীর সহায়তায় তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। ওই ঘরে তরুণীর মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলা হয় এবং তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের সময় ভিডিও ধারণ করার অভিযোগও এনেছেন ভুক্তভোগী।


৭ মাস আটকে রাখার অভিযোগ, নোবেলের স্ত্রী বলছেন ‘অবাস্তব’

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, নোবেল দীর্ঘ সাত মাস ধরে ওই তরুণীকে জোরপূর্বক আটকে রেখে যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন। এমনকি অপহরণের কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবি নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সেইসব ছবিতে দেখা গেছে—নোবেল ও অভিযোগকারী তরুণীকে হাসিমুখে, অন্তরঙ্গ ভঙ্গিতে একসাথে সময় কাটাতে। এতে নেটিজেনদের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, "যেখানে দুজন এত ঘনিষ্ঠ, সেখানে অপহরণ বা জোরপূর্বক আটকে রাখার বিষয়টা কিভাবে সম্ভব?"

এই বিষয়ে নোবেলের স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ স্পষ্ট ভাষায় ঘটনাটিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “এই আধুনিক প্রযুক্তির যুগে, কেউ যদি মনে করেন কাউকে সাত মাস আটকে রাখা সম্ভব—তাহলে তা সম্পূর্ণ হাস্যকর ও বাস্তবতাবিরুদ্ধ চিন্তা। এটা বিভ্রান্তি ছড়ানো ছাড়া কিছুই না।”


নেটিজেনদের মধ্যে বিভক্ত প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনাকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। একপক্ষ মনে করছে, ভুক্তভোগীর অভিযোগ গুরুতর এবং তার আইনি লড়াইকে সম্মান জানানো উচিত। অপরপক্ষ বলছে, সম্পর্ক ভাঙনের পর প্রতিশোধমূলক মনোভাব থেকেই এমন অভিযোগ আনা হতে পারে।

ফেসবুক, টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামে ঘুরে বেড়ানো ছবিগুলোতে নোবেল ও তরুণীকে ঘনিষ্ঠ ভঙ্গিতে দেখা যাওয়ায় অনেকেই বলছেন, এই ছবি প্রমাণ করে তাদের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল। আবার কেউ কেউ বলছেন, ছবি দিয়ে সবকিছু বিচার করা যায় না—ঘনিষ্ঠতা থাকলেও জোরপূর্বক ঘটনা সম্ভব।


আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ তদন্ত

ডেমরা থানা জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে। মামলার অন্যান্য বিবাদীদেরও শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তদন্তে যদি প্রমাণ মেলে, তাহলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আইনজীবীরা বলছেন, এ ধরনের মামলায় মূল চ্যালেঞ্জ হয় তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা এবং আসল ঘটনা উদঘাটন করা। যদি ধর্ষণের ভিডিও বা সুনির্দিষ্ট মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়া যায়, তাহলে মামলাটি জোরালো ভিত্তি পাবে। অন্যদিকে, যদি অভিযোগ প্রমাণিত না হয়, তাহলে এটি হয়রানিমূলক মামলা বলেই প্রমাণিত হবে।


প্রেম না প্রতারণা—সত্য উদঘাটনের অপেক্ষায় দেশ

নোবেলের বিরুদ্ধে এই মামলায় নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে সেলিব্রিটি জীবন, ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং তার প্রভাব। ঘটনাটি প্রেমের মোড়কে প্রতারণা, না কি সম্মতিতে গড়ে ওঠা সম্পর্কের ভয়াবহ পরিণতি—তা নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়ার ওপর।

Hiçbir yorum bulunamadı


News Card Generator