নির্ধারিত সময় শেষ, যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই ২-০ গোলে এগিয়ে ইউরোপিয়ান জায়ান্টরা। ম্যাচটা আর কতটুকুই বা বাকি? কিন্তু ফুটবল যে তার সব চমক জমিয়ে রেখেছিল ঠিক সেই সময়ের জন্য!
শেষ ছয় মিনিটে দেখা গেল ভিন্ন এক নাটক। এক মুহূর্তে যেটি ছিল রিয়ালের প্রায় একচেটিয়া ম্যাচ, পরবর্তী মুহূর্তে সেটিই রূপ নেয় উত্তেজনার রোলার কোস্টারে। ৯২ মিনিটে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড এক গোল শোধ করে হঠাৎই ম্যাচে ফিরে আসে। রিয়াল যদিও ৯৪ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় ৩-১, তবে তা ম্যাচের উত্তেজনায় খুব একটা ভাটা ফেলতে পারেনি। বরং ৯৬ মিনিটে রিয়ালের দেয়ান হুইসেন লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ম্যাচে নতুন মোড় নেয়। শেষত ৯৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান ৩-২ করে ফেলে ডর্টমুন্ড।
শেষ বাঁশি বাজার পরও গ্যালারিতে যেন এক ধরণের হিমশীতল উত্তেজনা। রিয়াল মাদ্রিদ শেষ পর্যন্ত জিতেছে বটে, তবে যোগ করা সময়ের ওই ছোট্ট পরিসরে যা ঘটেছে, তা দর্শকদের স্মৃতিতে বহুদিন রয়ে যাবে।
এই নাটকীয় জয় রিয়ালকে পৌঁছে দিয়েছে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়।
ম্যাচের শুরুটা কিন্তু ছিল একদম বিপরীত চিত্রের। শুরু থেকেই বল দখল, গতি আর আক্রমণে আধিপত্য ছিল রিয়াল মাদ্রিদের। ১০ মিনিটেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন তরুণ তারকা গনসালো গার্সিয়া, যিনি ইতোমধ্যে এই প্রতিযোগিতায় চার গোল করে নিজের জাত চিনিয়েছেন। এরপর ২০ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন ফ্রান গার্সিয়া।
সেই দুই গোলের লিড নিয়েই রিয়াল প্রায় পুরো ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। ডর্টমুন্ড সুযোগ তৈরি করলেও প্রথম ৯০ মিনিটে তাদের খেলা ছিল ছন্দহীন। কিন্তু যোগ করা সময়ে হঠাৎ করেই যেন সব হিসেব-নিকেশ উল্টে দিল তারা।
রিয়ালের হয়ে যোগ করা সময়ে তৃতীয় গোলটি করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। গোল করার পর উদ্যাপনে তিনি শ্রদ্ধা জানান সদ্য সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পর্তুগিজ ও লিভারপুল তারকা দিয়োগো জোতাকে। ডর্টমুন্ডের হয়ে দুটি গোল করেন ম্যাক্সিমিলিয়ান বিয়েইর ও সেরহু গিরাসি।
ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ জাবি আলোনসো বলেন, “৮০ মিনিট পর্যন্ত আমরা প্রায় সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলাম। কিন্তু শেষ ১০ মিনিটে কিছুটা গড়বড় হয়ে গিয়েছিল। আমাদের ধার পড়ে গিয়েছিল এবং রক্ষণে শৃঙ্খলার অভাব দেখা দেয়। তবে এ থেকেই শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী ম্যাচে ভালো কিছু করতে চাই।”
পিএসজির বিপক্ষে সেমিফাইনাল প্রসঙ্গে আলোনসো যোগ করেন, “ওদের বিপক্ষে খেলা সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। তবে আজকের ম্যাচ থেকে ইতিবাচক দিকগুলো নিয়েই আমরা সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চাই।”