সত্যজিৎ দাস:
চায়ের সুগন্ধে ঘেরা মৌলভীবাজার এখন শুধু পর্যটন নয়, জ্বালানি সম্ভাবনার জন্যও দেশের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। পেট্রোবাংলার সর্বশেষ (১ জুলাই ২০২৪) প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে- জেলার গ্যাসক্ষেত্রে রয়েছে প্রায় ২০ বিসিএফ (শত কোটি ঘনফুট) গ্যাস, যা দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ ভাণ্ডার হিসেবে মৌলভীবাজারকে নতুন করে সামনে তুলে ধরেছে।
দীর্ঘদিন ধরে চা উৎপাদনের জন্য পরিচিত এই জেলা এখন প্রমাণ করছে তার ভূগর্ভও কম সমৃদ্ধ নয়। দেশের মোট আনুমানিক ৩০ টিসিএফ গ্যাস মজুতের মধ্যে মৌলভীবাজারের অংশটি তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ-কারণ এখানকার গ্যাসের গুণগত মান উন্নত এবং উত্তোলন ব্যয় তুলনামূলক কম।
২০১০ সালের আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের পরিমাণ নির্ধারিত হয়েছিল ২৮.৭৯ টিসিএফ। ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে উত্তোলিত হয় ২০.৩৩ টিসিএফ,অবশিষ্ট থাকে প্রায় সাড়ে ৮ টিসিএফ।
২০২৩ সালে পেট্রোবাংলা পুনর্মূল্যায়ন করে জানায়,দেশের মোট সম্ভাব্য মজুত এখন প্রায় ৩০ টিসিএফ। এ পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২২ টিসিএফ। ফলে কার্যকর মজুত থাকে প্রায় ৮ টিসিএফ-যা বর্তমান হারে আরও ১১ বছর চলার মতো।
বিশেষজ্ঞদের মতে,মজুতের শেষভাগে থাকা বহু গ্যাস বাণিজ্যিকভাবে তুলতে গেলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তাই বাস্তবে দেশের গ্যাস আরও ৮ বছরের মতো চলবে বলে অভিমত তাদের।
বাংলাদেশে মোট ২৯টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে উৎপাদনে আছে ২০টি। মৌলভীবাজারের গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মজুত পরিমাণ কম হলেও তাদের ভূতাত্ত্বিক স্থিতি এবং উৎপাদন সম্ভাবনা স্থিতিশীল-যা দেশের জ্বালানি কৌশলে বিশেষ স্থান দিচ্ছে এ জেলাকে।
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী:
মৌলভীবাজারে প্রায় ২০ বিসিএফ,
তিতাসে;প্রায় ২ টিসিএফ
বিবিয়ানায় ১.৬৬ টিসিএফ
জালালাবাদে ৭০০ বিসিএফের কম
বাখরাবাদ,কৈলাসটিলা,রশিদপুরসহ আরও কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্রে রয়েছে মাঝারি মজুত।
চায়ের পাহাড়ঘেরা এই জেলা এখন দ্রুতই জ্বালানি খাতে কৌশলগত অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে। পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও নতুন অনুসন্ধান কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারলে মৌলভীবাজার দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় আরও বড় ভূমিকায় আসতে পারে।



















