আদিতমারি উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ক্যাম্পেটারি সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রতিনিয়তই রাতের অন্ধকার আর ঘন কুয়াশাকে টার্গেট ও আড়াল হিসেবে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক গরু ও মাদক পাচারচক্র। সীমান্তের ৯২৪ ও ৯২৬ প্লেয়ার পয়েন্টে প্রতি রাতেই ভারত থেকে গরুর সঙ্গে মাদকও প্রবেশ করছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
রাত গভীর হলে দুষ্কৃতকারীরা কুয়াশার সুযোগ নিয়ে গরুর পাল নিয়ে আসে সীমান্তের দিকে। একই রুটে ছোট–বড় প্যাকেটে মাদকও পাচার হচ্ছে বলে জানা গেছে। পাচার ঠেকাতে ভারতীয় বিএসএফের ককটেল ও গুলির শব্দ প্রায়ই শোনা যায়। হঠাৎ বিস্ফোরণ ও গুলির ধারাবাহিক শব্দে আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন সীমান্তপারের মানুষ। অনেকের মতে, “এমন শব্দে মনে হয় সীমান্ত নয়, যুদ্ধক্ষেত্রের পাশে আছি।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, ভারত থেকে আসা এই গরুগুলো চোরা পথে ঢুকে পরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাট–বাজারে পৌঁছে যায়। এতে তৈরি হচ্ছে “বাজারের স্থিতিশীলতা সংকট”, “পশুহাটে বৈষম্যমূলক মূল্যহ্রাস” এবং “দেশীয় বাণিজ্যে অস্বাভাবিক চাপ”। স্থানীয় হাট–বাজারের গরুর দাম ক্রমাগত কমে যাওয়ায় বৈধ ব্যবসায়ী ও খামারিরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
দেশীয় গরুর খামারিরা বলছেন, অবৈধ পথে আসা গরুর দামে বাজার ভরে যাওয়ায় তাঁদের খরচ–বিনিয়োগ উঠে আসছে না। দীর্ঘদিন ধরে লালন–পালন করা দেশীয় গরু আজ অবৈধ গরুর চাপে পিছনে পড়ে যাচ্ছে। তারা এটিকে “দেশীয় পশুখাতের জন্য গুরুতর হুমকি” বলে উল্লেখ করেন।
এলাকাবাসীর মতে, রাত যত গভীর হয় পাচারকারীদের তৎপরতা ততই বৃদ্ধি পায়। মাদক ও গরু—দুটি চক্রই একই রুট ব্যবহার করায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। প্রশাসনের সঠিক নজরদারি না থাকলে এ ধারা আরও বিস্তৃত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
স্থানীয়রা দাবি করেছেন, সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারি, যৌথ অভিযান বৃদ্ধি এবং পাচারচক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তাঁদের আশা, শক্ত পদক্ষেপ নিলে কুয়াশার আড়ালে চালানো এই গরু–মাদক পাচারের পথ বন্ধ হবে এবং সীমান্ত এলাকা আবারও নিরাপদ ও স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরে পাবে।



















