২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দপ্তরে সংঘটিত নৃশংস সেনা হত্যাযজ্ঞের তদন্ত কমিশনের জমা দেওয়া প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এই স্বাধীন তদন্ত কমিশন তাদের রিপোর্টে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাতিজা ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সংশ্লিষ্টতার ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছে। কমিশন সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তার সংশ্লিষ্টতার আদ্যোপান্ত খুঁজে বের করেছে।
প্রতিবেদনে আরও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, হত্যাকাণ্ডের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে শেখ হাসিনাকে উদ্ধার করার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে সামরিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে 'India Today'-তে প্রকাশিত 'More than a Mutiny' নামক প্রবন্ধের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। প্রবন্ধটির লেখক সৌরভ শুকলা উল্লেখ করেছেন যে, ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভারত শেখ হাসিনাকে উদ্ধারের জন্য ত্রিপুরায় একটি সম্মুখবর্তী বিমানবাহিনী ঘাঁটিতে দুটি এবং কলকাতায় একটি কমান্ডো প্লাটুন প্রস্তুত রেখেছিল।
তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পুরো পরিকল্পনা ভারতীয় পক্ষের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয়। সমন্বয়ের উদ্দেশ্যে ব্যারিস্টার তাপসের অফিস ও বাসায় একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রিপোর্টে গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে যে, তাপসের অফিসেই ভারতীয় গোয়েন্দাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই হত্যাযজ্ঞের চূড়ান্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। তদন্ত কমিশন সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে যে, ভারতীয় কমান্ডো ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মোট ২৪ জন সদস্য এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।
কমিশন আরও নিশ্চিত হয়েছে যে, ভারতে পলাতক শেখ পরিবারের আরেক প্রভাবশালী সদস্য শেখ সেলিমও এই পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন। এছাড়া, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজও এই ষড়যন্ত্রের বিষয়ে অবগত ছিলেন বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। কমিশন মনে করে, রৌমারী, বড়াইবাড়ী ও পদুয়ার ঘটনার প্রতিশোধ এবং সেনা মনোবল ভেঙে দিয়ে দেশের ওপর আধিপত্য বিস্তারের বাসনা থেকেই এই সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল।



















