ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ দেশের প্রধান প্রধান হাইওয়েগুলোতে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবার প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারি শুরু হচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান সম্প্রতি এক গোলটেবিল বৈঠকে ঘোষণা করেছেন, সারাদেশে প্রায় ১৪০০ অত্যাধুনিক ক্যামেরা বসানো হচ্ছে, যা সড়কের প্রতিটি ইঞ্চি কভার করবে এবং রিয়েল-টাইমে সমস্ত অনিয়ম শনাক্ত করবে। এই উদ্যোগকে সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক বিশাল ডিজিটাল বিপ্লব হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান জানান, নতুন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন থেকে আর কেবল অতিরিক্ত গতি নয়, সিগন্যাল লঙ্ঘন থেকে শুরু করে সন্দেহজনক প্রতিটি গতিবিধি ক্যামেরা দিয়ে ধরা পড়বে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আইন লঙ্ঘনের সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে গাড়ির মালিকের মোবাইল নম্বরে চলে যাবে ডিজিটাল জরিমানা বা ‘ই-চালান’ সংক্রান্ত বার্তা।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘টেকসই উন্নয়নে সড়ক নিরাপত্তা আইন: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই পদ্ধতি কার্যকর করার লক্ষ্যমাত্রা জানান। ডিআইজি বলেন, আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই জরিমানার পুরো প্রক্রিয়াটি ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। এতে পুলিশের সঙ্গে সরাসরি তর্ক বা হাতে হাতে জরিমানা প্রদানের দিন শেষ হতে চলেছে।
এই আধুনিক ক্যামেরাগুলোর সক্ষমতা শুধুমাত্র গতি পরিমাপের মধ্যে সীমিত নয়। এগুলো মুভমেন্ট অ্যানালাইসিস, ক্রাউড ডিটেকশন এবং যেকোনো সন্দেহজনক আচরণও নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। ডিআইজি নিশ্চিত করেছেন, এই ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ও টাইম-স্ট্যাম্পড ডেটা আদালতে শক্তিশালী ডিজিটাল প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে, যা মামলা নিষ্পত্তিতে নতুন গতি আনবে এবং মুখের কথার ওপর নির্ভরতা কমাবে। এই ডিজিটাল প্রমাণের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলায় জয়লাভ করা সহজ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এই পদক্ষেপটি দেশের সড়ক ব্যবস্থাপনাকে একটি নতুন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।



















