গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান অভিযোগ করেছেন, শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে এমন পরিকল্পনা করছেন যা আওয়ামী লীগের নিরপরাধ নেতাকর্মীদেরকেই বিপদের মুখে ফেলবে। তিনি সতর্ক করেন— নির্বাচনকে ঘিরে যেকোনো উসকানি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে গভীর সংকটে ফেলতে পারে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান একটি বিস্ফোরক অভিযোগ উত্থাপন করে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ, নিরপরাধ এবং দীর্ঘদিন ধরে নীরব থাকা নেতাকর্মীরা আবারও এক অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে পারেন, আর তার পেছনে রয়েছে ‘শেখ হাসিনার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
রাশেদ খানের মতে, গত প্রায় ১৫ মাস আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা তুলনামূলকভাবে শান্তিতে ছিলেন। রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে আসায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হামলা বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগও ছিল তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু তার ভাষায়— “শেখ হাসিনা তাদের শান্তিতে থাকতে দিতে চান না।” তিনি দাবি করেন, দিল্লিতে বসে শেখ হাসিনা যে নতুন রাজনৈতিক পরিকল্পনা তৈরি করছেন, তাতে আবারও আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের নিরীহ সদস্যরা সন্দেহের ছায়ায় ঢেকে যাবেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ভেতরে যারা পরিস্থিতি না বুঝে আবারও রাজপথে নামবে, তাদের অনেকেই নতুন সংকটে পড়তে বাধ্য হবে। কারণ, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যেকোনো উসকানি সরকারবিরোধী গণজাগরণকে আরও প্রজ্বলিত করতে পারে। এ কারণে দলীয় নেতাকর্মীরা যেকোনো মুহূর্তে আইনি বা সামাজিক চাপের মুখে পড়তে পারেন।
ফেসবুক পোস্টে রাশেদ খান উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের নিরপরাধ ও সাধারণ নেতাকর্মীদের ‘প্রমাণ’ দিতে হবে যে তারা কোনো ধরনের উসকানিমূলক কার্যক্রমে জড়াবেন না এবং অপরাধীদের আশ্রয় দেবেন না। তিনি পরামর্শ দেন, “যারা অপরাধী আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ, তাদের চিহ্নিত করে পুলিশের হাতে তুলে দিন।” তার দাবি— গণঅধিকার পরিষদ নিরীহ কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেবে না, তবে অপরাধীদের সঙ্গে কখনোই আপোষ করবে না।
তিনি আরও লেখেন, জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রলীগকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করেছিলেন এমন অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি এখনও নেপথ্যে সক্রিয়। এদের নিয়ন্ত্রণে না আনলে নির্বাচনের আগে দেশকে আবারও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
রাশেদ খান সরকারকে দ্রুত বিশেষ অভিযান পরিচালনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে অস্ত্র উদ্ধার এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। তার মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টাকারী সব শক্তির বিরুদ্ধেই কঠোর হওয়া উচিত।
পোস্টের শেষাংশে তিনি সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন কর্মসূচি’ প্রতিহত করার জন্য সাধারণ মানুষ ও ছাত্রসমাজকে ধন্যবাদ জানান। তার দাবি— জনগণই এখন দেশকে অস্থিতিশীল করা যেকোনো পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী শক্তি।



















