বরুড়ায় অবৈধ ভেকু–ড্রেজারের দাপট!

Rabiul Alam avatar   
Rabiul Alam
আদ্রা–লক্ষীপুর–পয়ালগাছা তিন ইউনিয়নে ফসলি জমি ধ্বংস, রাতভর ট্রাকের শব্দে অতিষ্ঠ জনতা—প্রশাসন কোথায়?..

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় একের পর এক ইউনিয়নে ভয়াবহভাবে বেড়ে চলছে অবৈধ ভেকু ও ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার মহোৎসব। আদ্রা, লক্ষীপুর এবং পয়ালগাছা ইউনিয়নে যেন দেদারসে চলছে মাটি ব্যবসায়ীদের বেপরোয়া তৎপরতা। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের অন্ধকারে চলছে ড্রাম ট্রাক ও ড্রেজারের গর্জন। এতে ফসলি জমি ধ্বংস, রাস্তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়া এবং শিশু ও অসুস্থ মানুষের নিদ্রাহীন রাত—সব মিলিয়ে এলাকাবাসীর জীবন যেন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আদ্রা ইউনিয়নের পেরপেটি থেকে শাপলোলা যাওয়ার মেইন সড়কের পূর্ব পাশে বিএনপি নেতা আজাদের নেতৃত্বে অবৈধ ভেকু দিয়ে মাটি কাটা চলছে। স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলা কার্যক্রম বন্ধ রাখলেও রাত হলেই শুরু হয় ট্রাকের দীর্ঘ সারি।
নোয়াগাঁও ব্রিকস ফিল্ড এর দক্ষিণ পাশে ফসলি জমি নষ্ট করে রাতভর ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে রাতভর ড্রেজারের শব্দে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ার চিত্র উঠে এসেছে।

স্থানীয়রা জানান, যুবদল নেতা আমান এ ড্রেজার ব্যবসার মূল হোতা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান—
“আমান আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল, কিন্তু ৫ আগস্টের কিছুদিন আগে হঠাৎ বিএনপিতে যোগ দেয়। এরপর থেকেই মাটি ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজশ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।”
১৪ শতাংশ জমি থেকে মাটি উত্তোলনের অভিযোগ—‘ভবিষ্যতে চাষাবাদ হবে কীভাবে?’

অভিযোগ রয়েছে—ড্রেজারের মালিক নোয়াগাঁও ভূইয়া বাড়ির পশ্চিম পাশে রাস্তার উত্তরের একটি জায়গায় ১,৯২,০০০ টাকার কাজ নেয় এবং ২০,০০০ টাকা বায়না গ্রহণ করেছে।

১৪ শতাংশ ফসলি জায়গার মধ্যে ইতিমধ্যে ৬ শতাংশ গভীরভাবে কাটায় পাড় ভেঙে গেছে, বাকি ৮–৯ দিন ধরে মাটি উত্তোলন চলছে। কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন—
“১৪ শতাংশ জমি থেকে এত মাটি তুলে নিলে ভবিষ্যতে এখানে কীভাবে ফসল আবাদ করব? চারপাশেই তো জমি। মাটি নষ্ট হলে উৎপাদনশীলতা হারাবে।”
একইভাবে ১৪নং লক্ষীপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামে ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধ ভেকু দিয়ে মাটি কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসীর দাবি—এখানেও রাতের আঁধারে চলছে ভয়ংকর ড্রেজার কার্যক্রম।

১৫নং পয়ালগাছা ইউনিয়নের পেড্ডা গ্রামে ভাউকসার থেকে মুদাফরগঞ্জ যাওয়ার মেইন সড়কের পূর্ব পাশে চলছে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন। সড়কের পাশ ঘেঁষে মাটি কাটায় যেকোনো সময় বড় ধরনের ধস বা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এ যেন ‘দেখার কেউ নেই’—প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ একাধিক ইউনিয়নে একই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম চললেও উপজেলা প্রশাসনের দৃশ্যমান কোনো অভিযান নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
তাদের প্রশ্ন 

“অবৈধ ভেকু–ড্রেজার রাতভর চলে, ট্রাকের শব্দে ঘুমাতে পারি না, ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে—তবুও প্রশাসন নীরব কেন?”

לא נמצאו הערות


News Card Generator