ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ভালুকা-গফরগাঁও সড়কে প্রতিদিনই তীব্র যানজটের শিকার হচ্ছেন হাজারো যাত্রী। বিশেষ করে অফিস সময়ে এই রাস্তায় যান চলাচল কার্যত অচল হয়ে পড়ে। মূল কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে এলোমেলোভাবে দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশা, অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড এবং প্রশাসনের নজরদারির অভাব।
সকাল ৮টা থেকে ১১টা এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে স্থবির হয়ে থাকে যান চলাচল। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দেখা যায় ভালুকা বাজার, কলেজগেট ও মল্লিকবাড়ি এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু অটোরিকশা চালক নিজেদের সুবিধামতো রাস্তার মাঝেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করান। এতে রাস্তার একাংশ প্রায় সর্বদাই বন্ধ থাকে।
একজন যাত্রী বলেন, "প্রতিদিন ২০ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিতে ঘণ্টা লাগে। অফিসে সময়মতো পৌঁছানো কঠিন হয়ে গেছে। ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষাতেও দেড়ি হয়।"
সিএনজির অবৈধভাবে গড়ে ওঠা অস্থায়ী স্ট্যান্ডগুলো পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। অনেক চালক স্টেশন চত্বরে দীর্ঘ সময় গাড়ি রেখে যান, যাতে নতুন যাত্রী তুলতে পারেন। এতে রাস্তা সরু হয়ে পড়ে এবং দ্রুতগামী যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চললেও প্রশাসনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগের মাঝে সমন্বয়ের অভাবও লক্ষণীয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, "এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য মার খাবে। মানুষ ভালুকা-গফরগাঁও রোডে চলাচলই বন্ধ করে দেবে।"
এ বিষয়ে ভালুকা থানার এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,
"আমরা সমস্যা সম্পর্কে অবগত। কিন্তু যানবাহনের সংখ্যা, চালকদের অসচেতনতা ও ট্রাফিক পুলিশের জনবল সংকট সব মিলিয়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না।"
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও কঠোর নজরদারি ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এলাকাবাসীর দাবি, অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ, অটো রিকশা চলাচলের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং নিয়মিত ট্রাফিক মনিটরিং ছাড়া এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে না।