বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীকে নিয়ে কটাক্ষ করার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফেসবুক থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায় কেন্দ্র..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীকে নিয়ে কটাক্ষ করে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেওয়ার পর হঠাৎ করে ডিজেবল হয়ে যায় ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা আলমের আইডি। আইডি ফিরে পেয়ে ক্ষমা চান এবং জানান, উদ্দেশ্য ছিল না অসম্মান করা। ঘটন..

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীকে নিয়ে কটাক্ষ করার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফেসবুক থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলমের অ্যাকাউন্ট। প্রায় ১৪ ঘণ্টা ডিজেবল থাকার পর বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে তিনি ফের নিজের আইডি ফিরে পান এবং সঙ্গে সঙ্গেই একটি নতুন স্ট্যাটাসে ক্ষমা চেয়ে ব্যাখ্যা দেন পুরো পরিস্থিতি।

নিজের সেই স্ট্যাটাসে মানসুরা আলম বলেন, “আশিক চৌধুরীকে যারা একপ্রকার মহাপুরুষ বানিয়ে ফেলছিলেন, তাদের উদ্দেশ্যেই আমার কটাক্ষ ছিল। আমি নিশ্চিত আশিক চৌধুরী নিজেও এমন কিছু চান না। তিনি তার কাজ করে যেতে চান। আমার স্ট্যাটাসে তাকে ব্যক্তিগতভাবে অসম্মান করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।”

তিনি আরও জানান, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়েও তিনি কখনোই তাচ্ছিল্য করেননি বরং বহুবার তার প্রশংসা করেছেন। “আপনারা আমার পুরনো পোস্ট দেখলেই বুঝবেন, আমি ড. ইউনূসের কাজের প্রশংসা করেছি একাধিকবার,” বলেন মানসুরা।

নেত্রী আরও বলেন, যারা এই দেশে সত্যিকারের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে আসেন, তারা প্রশংসার দাবিদার। তবে ফ্যাসিস্ট শাসনামলে যেসব তথাকথিত 'স্মার্ট ফিগার'— যেমন সুলাইমান সুখন, মাশরাফি, সাকিব—এদের নিয়ে অতিমাত্রায় প্রচার হয়েছিল, তাদের পরিণামও জাতি দেখেছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই মানসুরার মনে ভয় কাজ করেছে, হুট করে কাউকে ‘আইকনিক ফিগার’ বানানো নিয়ে।

তিনি বলেন, “আশিক চৌধুরিদের ইমেজ বিল্ড করতে গিয়ে যদি কেউ তাকে তার কাজের চেয়েও বড় করে তুলে ধরেন, সেটা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমরা যারা বাকস্বাধীনতা ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়, তাদের স্বপ্নে এই ধরনের আচরণ ছিল না।”

এছাড়া মানসুরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা ও মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ব্যক্তিগত আক্রমণের জবাব আমি দেবো না। আমার দায় ছিল শুধু আশিক চৌধুরির প্রসঙ্গে। স্ক্রিনশট, এডিটেড ছবি বা অন্য কোনো কনটেন্ট নিয়ে কেউ যা করছে, তার দায় আমি নেই। সেটার জবাবদিহিতা তাদের, যারা অন্যের স্বাধীনতাকে অসম্মান করছে।”

স্ট্যাটাসের শেষে তিনি বলেন, “মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে শিখুন। কেউ সমালোচনা করলেই তাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা একেবারেই অনুচিত। এটাও পারিবারিক শিক্ষার অংশ হওয়া উচিত।”

উল্লেখ্য, বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরের পর সামাজিক মাধ্যমে আশিক চৌধুরীর একটি উপস্থাপনার ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে তার স্টাইল ও বক্তব্যে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই প্রশংসা করতে থাকেন। এই প্রেক্ষিতেই মানসুরা আলম একটি স্ট্যাটাস দেন: “শোনলাম, নেটিজেন পাড়ায় নাকি নতুন আব্বু এসেছে।”

এই স্ট্যাটাসের পরপরই শুরু হয় অনলাইন রোষানল। নেটিজেনরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকেন। অনেকেই তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন। আর এর পরপরই মানসুরার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে ডিজেবল হয়ে যায়, যা ১৪ ঘণ্টা পর পুনরায় চালু হয়।

এই ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—ব্যক্তিগত মত প্রকাশের পরিণতি যদি এই হয়, তাহলে বাকস্বাধীনতার ভবিষ্যৎ কোথায়?

کوئی تبصرہ نہیں ملا


News Card Generator