আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে হামলা হলে ইসলামাবাদ সে দেশের 'গভীরে আঘাত' হানবে বলে সতর্ক করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি আলোচনার ব্যর্থতার জন্য কাবুলকে দায়ী করে ভারতের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ আজ বুধবার এক কঠোর সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হলে ইসলামাবাদ নিশ্চিতভাবেই আফগানিস্তানের ‘গভীরে’ আঘাত হানবে। আন্তসীমান্ত সন্ত্রাস মোকাবিলায় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দুই দেশের মধ্যে হওয়া আলোচনায় কোনো 'কার্যকর সমাধানে পৌঁছাতে ব্যর্থতা' ঘোষণার পরই পার্লামেন্ট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কঠোর অবস্থানের কথা জানান।
খাজা আসিফ বলেন, “যদি তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করা হয় এবং তারা আমাদের ভূখণ্ড লঙ্ঘন করে, তবে প্রতিশোধ নিতে যদি আমাদের আফগানিস্তানের গভীরে যেতে হয়, আমরা অবশ্যই তাই করব।” এর আগে গত ২৫ অক্টোবর দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরুর আগেও তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে এর অর্থ হবে ‘প্রকাশ্য যুদ্ধ’।
আজকের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার জন্য তিনি সরাসরি কাবুলের আন্তরিকতার অভাবকে দায়ী করেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফের সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হলো, “কাবুলের পুরো নেতৃত্ব ভারতের হাতে খেলছে” এবং “ফিতনা আল-হিন্দুস্তান” আফগানিস্তানের মাধ্যমে পাকিস্তানের ওপর তাদের অবস্থানকে কাজে লাগাতে চাইছে। তার অভিযোগ, ভারতের নির্দেশে এবং তাদের ‘এজেন্ট’ হয়েই কাবুল সরকার পাকিস্তানের ওপর তাদের অবস্থান কাজে লাগাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হওয়া সত্ত্বেও কাবুল তা আটকে দিয়েছে। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নির্ভর করছে সম্পূর্ণভাবে আফগানিস্তানের ওপর। আলোচনায় টিটিপিকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও তিনি স্পষ্ট করে দেন, যা পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সরাসরি প্রত্যাখ্যাত হতো।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি দাবি করেন, আফগানিস্তান ‘একটি রাষ্ট্রের সংজ্ঞা পূরণ করে না’ এবং অন্তর্বর্তী প্রশাসনও এটিকে তা মনে করে না। তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তান কার্যত খণ্ড খণ্ড হয়ে গেছে, যেখানে এক বা একাধিক প্রভাবশালী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রয়েছে।
আলোচনা ভেঙে যাওয়ায় বিশ্বসংস্থা জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আশা প্রকাশ করেছে যে, “আবার লড়াই শুরু হবে না।” জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক নিউইয়র্কের সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের কাছে এই উদ্বেগের কথা জানান।



















